ঢাকা: তৃতীয় দফা বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। আগামী বুধবার (৮ নভেম্বর) ভোর ছয়টা থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াত।
সোমবার (৬ নভেম্বর) জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বিবৃতিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার গঠন, আমীরে জামায়াত শফিকুর রহমানসহ সব রাজবন্দি ও ওলামা-মাশায়েখের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনার দাবিতে আগামী ৮ নভেম্বর (বুধবার) ভোর ছয়টা থেকে শুরু হয়ে ১০ নভেম্বর (শুক্রবার) ভোর ছয়টা পর্যন্ত পুরো দেশে টানা ৪৮ ঘণ্টা রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের তৃতীয় দফা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করছি।’
বিবৃতিতে এটিএম মা’ছুম আরো বলেন, ‘সরকার একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করে ফের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। সরকারের অপশাসনে দেশের মানুষ অতীষ্ঠ হয়ে পড়েছে। মানুষকে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। দেশে চলছে অবিচার-অনাচার। দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে অবাধে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করা হয়েছে। বিরোধীদলের লোকদের ওপর যখন-তখন হামলা করা হচ্ছে। গণগ্রেফতার করে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের বাড়িছাড়া করা হয়েছে। ঘর-বাড়ি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি করা হচ্ছে। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে অনেককে পথের ভিখারি বানানো হয়েছে। এভাবে কোন দেশ চলতে পারে না।’
এর আগে সোমবার (৬ নভেম্বর) ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বুধবার (৮ নভেম্বর) ভোর ছয়টা থেকে শুক্রবার (১০ নভেম্বর) ভোর ছয়টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি। টানা তিন দিনের অবরোধ শেষে গেল বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) নতুন করে দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এছাড়া, সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) পুরো দেশে দোয়া মাহফিল করে দলটি। রোববার ও সোমবার (৫ ও ৬ নভেম্বর) দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টা সর্বাত্মক অবরোধ পালন করছে বিএনপি। বিএনপির ডাকা দ্বিতীয় দফার এ ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগেই সোমবার (৬ নভেম্বর) নতুন করে ফের দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হল।
ঢাকায় গেল ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে এক পুলিশ সদস্য মারা গেছেন। পর দিন ২৯ অক্টোবর হরতাল পালন করে বিএনপি। এরপর ৩১ অক্টোবর থেকে পুরো দেশে তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি শেষ হয় বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর)।
এ দিকে, বিএনপির হরতাল ও অবরোধ চলাকালে পুরো দেশে অ্যাম্বুলেন্সসহ যাত্রীবাহী বেশ কিছু বাসে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। নানা স্থানে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।