শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ব্রিটিশ কাউন্সিলের ‘ইওর ওয়ার্ল্ড’ ভিডিও প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে জয়ী স্কলাস্টিকা স্কুল

বুধবার, আগস্ট ৯, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: সফলভাবে সোমবার (৭ আগস্ট) শেষ হল ব্রিটিশ কাউন্সিলের ‘ইওর ওয়ার্ল্ড’ ভিডিও প্রতিযোগিতা। দুর্দান্ত এক ভিডিও জমা দেয়ার মাধ্যমে এ বছরের প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছে ভিয়েতনাম থেকে কাউ গিয়াউই মাধ্যমিক স্কুল। জয়ী ভিডিওতে ‘সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ’ প্রতিপাদ্যে স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের সোশ্যাল অ্যাকশন প্রকল্প তুলে ধরে। ভিডিওতে সামাজিক সমস্যা চিহ্নিত করা হয় ও এর সমাধান তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা। প্রতিযোগিতায় আঞ্চলিক জয়ী ঘোষণা করা হয় পাকিস্তানের জোহার টাউনের লাহোর গ্রামার স্কুলকে। ব্রিটিশ কাউন্সিল পার্টনার স্কুলের সাথে প্রতিযোগিতা করে এ স্কুল প্রতিযোগিতায় আঞ্চলিক জয়ী ঘোষিত হয়। অন্য দিকে, ব্রিটিশ কাউন্সিলের পার্টনার স্কুলের সাথে প্রতিযোগিতা করে জাতীয় পর্যায়ে জয়ী হয় বাংলাদেশের স্কলাস্টিকা স্কুল। প্রতিযোগিতায় সিডনি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং দ্য রেডিয়াস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থান এবং ইয়েল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল তৃতীয় স্থান পেয়েছে।

বৈশ্বিক পর্যায়ে নিজেদের পার্টনার নেটওয়ার্কের স্কুলগুলো নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ব্রিটিশ কাউন্সিলের ফ্ল্যাগশিপ ভিডিও নির্মাণ প্রতিযোগিতা ‘ইওর ওয়ার্ল্ড।’ এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সমস্যা সমাধান সংশ্লিষ্ট দক্ষতা ও ডিজিটাল দক্ষতা দেখানোর সুযোগ পায়; একইসাথে, তারা তাদের নিজেদের জীবন, কমিউনিটি ও অভিজ্ঞতা নতুনভাবে আবিষ্কার করেন। প্রতিযোগিতাটি ব্রিটিশ কাউন্সিল পার্টনার স্কুল নেটওয়ার্কের স্কুলগুলোর ১৪-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ছিল।

এবার ১৭ বছরে পদার্পণ করা প্রতিযোগিতাটির (ইওর ওয়ার্ল্ড ২০২২-২৩) প্রতিপাদ্য ছিল ‘গুড হেলথ অ্যান্ড ওয়েল-বিইং, যা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার তিন নম্বর লক্ষ্যের সাথে সরাসরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। শিক্ষার্থীরা স্কুলে তাদের অধ্যয়ন করা বিষয় যেমন বিজ্ঞান, ব্যবসায় প্রশাসন ও গ্লোবাল স্টাডিস থেকে প্রাপ্ত ধারণা ও জ্ঞান নিয়ে দুর্দান্ত সব ভিডিও তৈরি করে। এসব ভিডিওতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের শিক্ষার ইতিবাচক ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের কমিউনিটির বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য সহযোগিতামূলক উপায়ে কাজ করার সক্ষমতা ও দক্ষতা দেখায়। এ বছর প্রতিযোগিতায় জমা পড়ে ৭৫০টিরও বেশি ভিডিও এবং প্রতিযোগিতায় ব্রিটিশ কাউন্সিল নেটওয়ার্কের স্কুলগুলো থেকে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

স্কলাস্টিকা স্কুলের গ্রেড-১২ এর ছাত্র ও জয়ী দলের সদস্য উৎসব সরকার বলেন, ‘এ ভিডিও নিয়ে কাজ করার মাধ্যমে আমরা একবিংশ শতাব্দীর দক্ষতা যেমন সহযোগিতা, দলগত কাজের দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা, সৃজনশীলতা ও ডিজিটাল স্বাক্ষরতা সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এর বাইরেও, আমরা কঠোর পরিশ্রম করা এবং এর পাশাপাশি অধ্যবসায় ও সহিষ্ণুতা অর্জন নিয়ে শিখতে পেরেছি।’

এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় সব দক্ষতার বিকাশ ঘটাতে ভূমিকা রেখেছে, তাদেরকে সৃজনশীল ও সমালোচনামূলক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম করবে; পাশাপশি, ক্যারিয়ারের জন্য প্রস্তুত হতে ও ভবিষ্যত গঠনে প্রস্তুত করে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। ‘ইউর ওয়ার্ল্ড’র মাধ্যমে ব্রিটিশ কাউন্সিল শিক্ষার্থীদের পরিবর্তনের প্রতিনিধি হতে অনুপ্রাণিত করবে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ইতিবাচক দিক সম্পর্কে বলতে গিয়ে স্কলাস্টিকা স্কুলের গ্রেড- টেন এর একাডেমিক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফিদিয়া কামাল বলেন, ‘অন্যান্য পার্টনার স্কুলগুলোকে আমি এই ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য উৎসাহ জানাই। কেবলমাত্র পুরস্কার অর্জন করাই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার মূল কারণ নয়। বরং, শিক্ষার্থীদের মেধা প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের সৃজনশীল দক্ষতাগুলোকে আরো শাণিত করা, আমাদের সামনে থাকা জলবায়ু বিপর্যয় বিষয়ে সম্ভাব্য সমাধান খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে বিশ্বের বাকিদের সাথে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিশ্চিত করা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধের প্রচেষ্টায় জয়ী হওয়াই এ প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য।’

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে থাকার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমের বাইরের কার্যক্রমে অংশ নেয়া দিন দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ‘ইওর ওয়ার্ল্ড’ এ অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীদের অবসর সময়ে নিজেদের ইতিবাচকভাবে বিকশিত করার সুযোগ এনেছে। এতে করে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে আলাদাভাবে চিহ্নিত হওয়ার পাশাপাশি, নিজেদের আশপাশের সামাজিক ও পরিবেশগত বিষয় নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির সুযোগ পাবে।

এ ব্যাপারে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর টম মিসিওসিয়া বলেন, ‘এ লেভেল, ও লেভেল ও আইজিসিই এর প্রস্তুতি নেয়ার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ কাউন্সিলের পার্টনার স্কুলগুলো কেবল বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রম (এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজ) ও ‘ইওর ওয়ার্ল্ড’ ভিডিও প্রতিযোগিতার মত যৌথ ক্লাসরুম প্রকল্পের মাধ্যমে তারা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সমাধান খুঁজে পেতে বৈশ্বিকভাবে বাকিদের সাথে সংযুক্ত হওয়া ও দায়িত্বশীল বিশ্ব-নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ দেয়।’