শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ভারতের সাথে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪

প্রিন্ট করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ঢাকা: ভারতের সাথে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সাথে বৈঠকের পর ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন বলেন। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতাচ্যুত ও অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর ভারতের সাথে সম্পর্কের ‘বরফ গলতে শুরু করেছে’ বলে বিশ্বাস করে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি।

সম্প্রতি প্রণয় ভার্মা সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে আলোচনা করতে বিএনপির কার্যালয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে বৈঠক করেন।’

এ ব্যাপারে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রণয় ভার্মার সাথে হওয়া এ বৈঠক উভয় দেশকে বহু ইতিবাচক দিকে নিয়ে গেছে। বাংলাদেশে গেল নির্বাচনের পর থেকেই আমাদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কিন্তু, এবার আমাদের অফিসে (ভারতের) হাইকমিশনার আসায় অবশ্যই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বরফ গলতে শুরু করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সব সময়ই খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে ও সম্পর্ক উন্নত হয়েছে। অবশ্যই, এটিও ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের একটি টার্নিং পয়েন্ট। তার দল ভারতকে আশ্বস্ত করেছে যে, ক্ষমতায় এলে তারা বাংলাদেশের ভূখণ্ড বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনকে ব্যবহার করতে দেবে না। যদিও অতীতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার রিপোর্ট রয়েছে।’

প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা পানি ভাগাভাগি সমস্যা, সীমান্ত হত্যা, বিদ্যমান বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার কথা উল্লেখ করেছি। একই সময়ে, ভারতের প্রধান ইস্যু ছিল নিরাপত্তা সমস্যা। আমরা আশ্বস্ত করেছি, আমরা ক্ষমতায় থাকলে, আমরা নিশ্চিত করব এ ভূখণ্ডটি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ব্যবহার করবে না। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক সব সময়ই খুব ভাল ছিল। কিন্তু, বিএনপি ও ভারতের সম্পর্ক নিয়ে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আমি মনে করি, বরফ গলতে শুরু করেছে। আশা করি, এ সম্পর্ক আরো ভাল হবে। এবার তারা (ভারত) আমাদের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করবে, বিশেষ করে ভারতকে এ দেশের মানুষের পালস বোঝার চেষ্টা করা উচিত। তাদের সব ডিম এক ঝুড়িতে রাখা উচিত নয়। তাদের উচিত (উভয় দেশের) জনগণের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলা।’

শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর ব্যাপারে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখনো জানি না যে, সরকার তাকে (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছে কিনা। তবে আমি মনে করি, তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর ফিরে আসা উচিত ও তার জবাবদিহি করা উচিত।’

সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা নিয়ে ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে- এমন ভুল বর্ণনা নিয়ে আমরা খুব উদ্বিগ্ন। আমি মনে করি না, কোন গুরুতর সমস্যা চলছে। প্রতিটি পরিবর্তনের পর কিছু সমস্যা থাকে; যা পুরোটাই রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক নয়। কিন্তু, আমরা আমাদের দেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য খুবই সজাগ। বিশেষ করে, পূজার পূর্বে আমরা এরমধ্যেই পুরো দেশে আমাদের ইউনিটগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছি।’