হাম্বানটোটা, শ্রীলঙ্কা: দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে নোঙর করেছে চীনের বিতর্কিত জাহাজ ‘ইয়ুয়ান ওয়াং-৫’। এ জাহাজে দুই হাজার নাবিক রয়েছেন বলে জানা যায়। জাহাজটি নোঙর করা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল ভারত। খবর রয়টার্সের।
শ্রীলঙ্কার বন্দরে চীনা জাহাজের নোঙর করা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা চলছে। চীনের দাবি, এ জাহাজ গবেষণা ও সমীক্ষার কাজে ব্যবহার করা হয়। যদিও নানা মহল থেকে অভিযোগ ওঠেছে, চীন এ জাহাজের মাধ্যমে নজরদারির কাজ করছে।
শ্রীলঙ্কার বন্দরে এ জাহাজের নোঙর করা নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল ভারত। সংশয় প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রও। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কারণে চীনা জাহাজের প্রবেশের বিষয়ে দোটানায় ছিল দ্বীপরাষ্ট্রটি। সে কারণেই প্রথমে এ জাহাজের প্রবেশে অনুমতি দেয় নি কলম্বো। কিন্তু পরে নিজেদের মত বদলায় তারা।
ভারতের উদ্বেগ সত্ত্বেও শনিবার (১৩ আগস্ট) চীনের জাহাজটিকে শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে দেশটির সরকার।
জাহাজটি নোঙর করাতে শ্রীলঙ্কার সাথে ঠিক কী আলোচনা হয়েছে, কীভাবে রাজি হল কলম্বো- এসব নিয়ে কোন কিছুই জানায় নি শি জিনপিংয়ের সরকার। এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন শুধু বলেছেন, ইয়ুয়ান ওয়াং-৫ জাহাজকে তাদের বন্দরে নোঙর করার ছাড়পত্র দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এর আগে চীনা জাহাজকে নোঙর করতে না দেয়ায়, গত ৮ আগস্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে বেইজিং বলেছিল, ‘এটা অন্যায়। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কয়েকটি দেশ কলম্বোর ওপর ‘চাপ’ সৃষ্টি করছে ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে। শনিবার (১৩ আগস্ট) এক বিবৃতিতে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ‘উদ্বেগ’ নিয়ে তারা পর্যালোচনা করছে।
গত ২৮ জুলাই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘চীনা জাহাজের সফর পর্যবেক্ষণ করছে দিল্লি।’ ভারত তার নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা করবে বলেও মন্তব্য করেন ওই কর্মকর্তা।
শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরটি চীনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ২০১৭ সালে গুরুত্বপূর্ণ হাম্বানটোটা বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম ৯৯ বছরের লিজে একটি চীনা কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করে শ্রীলঙ্কা সরকার।
ভারতের পক্ষে জানানো হয়েছে, গোটা পরিস্থিতির ওপর তারা নজর রাখছে। এর আগে ২০১৪ সালে চীনের একটি সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজ কলম্বোয় ডক করার অনুমতি দেয় শ্রীলঙ্কা, যা ক্ষুব্ধ করেছিল ভারতকে।