শেরপুর: শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী অবকাশ পিকনিক স্পটে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক মাদ্রাসাছাত্রী (১৪)। এ ঘটনায় লজ্জায় বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ধর্ষণের শিকার মাদ্রাসাছাত্রীর মা। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) গজনী অবকাশ কেন্দ্রের একটি পাহাড়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তবে গতকাল মঙ্গলবার ওই কিশোরীর মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টার পর সেটি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত মো. ইলিয়াস (২৫) নামের যুবকসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তবে এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। ইলিয়াস ঝিনাইগাতী উপজেলার কালীনগর এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে হতদরিদ্র পরিবারের ওই মাদ্রাসাছাত্রী তাঁর তিন-চারজন বান্ধবীর সঙ্গে ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশকেন্দ্রে বেড়াতে যায়। সেখানে ওই কিশোরীর সঙ্গে পূর্বপরিচিত মো. ইলিয়াসের সঙ্গে দেখা হয়। একপর্যায়ে বখাটে যুবক ইলিয়াস তাঁর তিন সহযোগীর সহায়তায় কিশোরীটিকে অবকাশকেন্দ্রের ভেতরে একটি পাহাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে ডাকচিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে ওই মাদ্রাসাছাত্রী কিশোরীটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন। তবে অভিযুক্তরা প্রভাবশালী পরিবারের হওয়া ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে এবং মামলা না করার জন্য ভুক্তভোগীর পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। এর পরও ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেয়েটির মা লোকলজ্জার ভয়ে বাড়ির পাশে জঙ্গলে গিয়ে বিষপান করেন। পরে বাড়ির লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইগাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে পাঠান। পরে সেখানেও তাঁর অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
ওই মাদ্রাসাছাত্রীর বাবা বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে জানান, বিষ পান করে তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ধর্ষণের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল-আমীন বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের হয়েছে। এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। এছাড়া ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’