রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

মাতারবাড়ি থেকে জাতীয় গ্রিডে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু

শনিবার, জুলাই ২৯, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

কক্সবাজার: জাতীয় গ্রিডে প্রাথমিকভাবে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করার জন্য কয়লাভিত্তিক মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিট শনিবার (২৯ জুলাই) চালু হয়েছে।

উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মীর আসলাম উদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় গ্রিডের সাথে সফল সমন্বয়ের পর, শনিবার (২৯ জুলাই) সকাল ১১টা ৫৮ মিনিটে জাতীয় গ্রিডে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহও বাড়ানো হবে। এর মধ্য দিয়ে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে আল্ট্রা সুপারক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটের প্রথমটি শনিবার (২৯ জুলাই) থেকে ট্রায়াল রান শুরু হচ্ছে।’

প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ডিসেম্বরে ইউনিটটি নিয়মিত উৎপাদন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্ল্যান্টের সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট, আগামী মার্চ বা এপ্রিল মাসে পুরোদমে উৎপাদনের যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এটি পুরোপুরি চালুর পূর্ব পরিকল্পনা ছিল।’

সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর অন্যতম মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি জাপানের সহায়তার মোট প্রায় ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে ও এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর অন্যতম।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, পুরো প্ল্যান্টে প্রতিদিন দশ হাজার টন ও প্রতিটি ইউনিটে পাঁচ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হবে। এখন পর্যন্ত দুই লাখ টন কয়লা সংরক্ষণ করা হয়েছে ও ৬৫ হাজার টন আগামী ৭ আগস্ট উৎপাদন এলাকায় পৌঁছবে।

প্রকল্প পরিচালক জানান, জাহাজ থেকে সরাসরি ট্যাঙ্কে কয়লা আনলোড করার জন্য প্রকল্প এলাকায় দুটি জেটির পাশাপাশি ১৭ লাখ টন স্টোরেজ ক্ষমতার চারটি ট্যাঙ্ক ইতিমধ্যে নির্মিত হয়েছে। ট্যাঙ্কগুলোর ৬০ দিনের জন্য কয়লা সংরক্ষণের সক্ষমতা রয়েছে। জাহাজ থেকে কয়লা আনলোড করতে দেড় থেকে দুই দিন সময় লাগবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কয়লা খালাস করা পরিবেশবান্ধব হবে। কারণ, কয়লা সরাসরি জেটি থেকে ট্যাঙ্কে অফলোড করা হবে।

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নে এক হাজার ৬০৮ একর জমির ওপর স্থাপিত হচ্ছে এই এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যার খরচ হবে ৫২ হাজার কোটি টাকা। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের স্থান পরিদর্শনকালে দেখা যায়, কয়লা উত্তোলনের জন্য দুটি জেটি ও কয়লা সংরক্ষণের জন্য চারটি ট্যাংক নির্মাণসহ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে।

মাতারবাড়ি গভীর বন্দর ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাইটের কাছে এলএনজি ও এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২৫ বছরের জন্য আজীবন ছাই সংরক্ষণের জন্য দুটি পৃথক পুকুরে ছাই রাখা হচ্ছে। একটির আয়তন ৯০ একর ও অন্যটির ৬০০ একর জুড়ে বিস্তৃত। কয়লা সংরক্ষণের জন্য ৮০ একর জমিতে কোল ইয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে ২০১৪ সালের ১৬ জুন একটি ঋণ চুক্তি সই হয়।

প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে জাইকা ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ও অবশিষ্ট সাত হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার ও পিসপিজিসিবিএলের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হচ্ছে।
এ প্রকল্পের দুটি অংশ আছে- যার একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও অন্যটি বন্দর।