ঢাকা: গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের উদ্যোগে সোমবার (২ অক্টোবর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন, কৃষক শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান ও সমসাময়িক রাজনীতি’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। সঞ্চালনা করেন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান।
বৈঠকে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেন, ‘করোনার কারণে প্রায় চার কোটি মানুষ গরীবের তালিকায় লিখেছেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুেষের জীবনযাত্রার মান কমেছে। আওয়ামী লীগ যে পরিমাণে লুটপাট করছে, তা ১০০ বছর খেলেও সমস্যা হবে না কিন্তু শ্রমিক বা সাধারণ মানুষ পুষ্টি হীনতায় ভুগছে। ১৫ দিনে চারটি ডিম কোম্পানি ৪০০-৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পৃথিবীর আর কোন রাষ্ট্রে এ রকম হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে কিনা সন্দেহ। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষির উপর চাপ পড়েছে, শিল্প পণ্যের উপর চাপ পড়েছে। সরকারের আশেপাশে লোকের কোটিপতি হয়েছে। লুটপাট করার জন্য সরকার বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যে দেশে অধিকাংশ লোক সই করতে পারে না, সেই দেশে ইভিএম ব্যবহার হবে কিভাবে? লক্ষ লক্ষ মানুষ মাঠে নামছে, কারণ মানুষ এ সরকারকে আর দেখতে চায় না। এ স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে নির্বাচনের আগে পদত্যাগে বাধ্য করতে যুগপৎ আন্দোলনের বিকল্প নেই।’
বাসদের সহ সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘বর্তমান সরকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় বসে আছে। প্রধানমন্ত্রী চোখের পানি ফেলে বলেছেন, পাঠকল বন্ধ হবে না আর হাজার হাজার শ্রমিক চোখের পানি ফেলে বেড়িয়ে গেছে। নির্বাচন যে কমিশনের অধীনে হবে, তিনি নিরপক্ষে না হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না।’
বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড হারুন চৌধুরী বলেন, ‘গণমানুষের অধিকার আদায় করার জন্য আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ২০১৪ সাল থেকে স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। গুম, খুন, জালনোট ও ভোট ডাকাতি শুরু করেন শেখ হাসিনার উত্তরসূরীরা। মুক্তিযুদ্ধের সময় শপথ করেছিলাম, চাকরিতে বৈষম্য থাকবে না, শিক্ষাতে বৈষম্য থাকবে না, মৌলিক অধিকারে কোন বৈষম্য থাকবে না। সব রাজনৈতিক দলের বিরোধীতার পরেও নয় হাজার কোটি টাকার ইভিএম মেশিন কেনার কারণ কি?’
সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সামছুল আলম বলেন, ‘কলঙ্কিত অধ্যায় তৈরি করার জন্য আমাদের পূর্বসূরিরা দেশ স্বাধীন করে নি। সব স্তরের শ্রমিকরা ২০ হাজার টাকা মজুরির জন্য আন্দোলন করছে। ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি পায়নি। রাষ্ট্র চালাতে না পারলে ক্ষমতা ছেড়ে দিন।’
বৈঠকে বক্তব্য দেন কৃষক শ্রমিক পার্টির (কেএসপি) সভাপতি সিরাজুল হক, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সদস্য কমরেড বিধান দাস।