শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

মালদ্বীপে তারাবিতে কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন সিলেটের কামরুল আলম

মঙ্গলবার, এপ্রিল ৪, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

মালদ্বীপে তারাবিতে কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন সিলেটের কামরুল আলম

ফুবামুলাহ, মালদ্বীপ:নিয়মিত সোস্যাল মিডিয়া কোরআন তেলাওয়াতের ভিডিও শেয়ার করতেন। ২০২৩ এর শুরুতে নজরে পড়েন বিশ্বের অন্যতম নয়নাভিরাম ও অপরূপ সৌন্দর্যের দেশ মালদ্বীপের সরকারী একটি মসসিজদ কমিটির নেতৃবৃন্দ। শুরু হয় প্রবাসীদের সহযোগিতায় যোগাযোগের চেষ্টা। সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষে এখন দেশটির ফুবামুলাহের মসজিদ আল ইনারায় সুললিত কণ্ঠে তারাবির নামাজ পড়িয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশি হাফেজ কামরুল আলম।

সিলেট জেলার বালাগঞ্জের বাসিন্দা কামরুল আলম। মাহবুবুর রহমান ও সাহেদা বেগম দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান তিনি। প্রাইমারী স্কুলে পড়ার পর ভর্তি হন মাদ্রাসায়। জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেটের (জেডিসি) পরীক্ষার পর নিজ ইচ্ছায় দুই বছরের মাথায় হিফজুল কোরআন শেষ করেন তিনি। বর্তমানে আলিম দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত আছেন এ হাফেজ।

কামরুল আলম বলেন, ‘গত বছর চট্টগ্রামের জেলা মডেল মসজিদে তারাবি নামাজের ইমামতি করি। সেখানকার কোরআন তেলাওয়াতের ভিডিও ইউটিউবে মালদ্বীপের একটি সরকারি মসজিদ কমিটি দেখতে পান। খোঁজ নিয়ে দেখলেন, আমি বাংলাদেশি। তখন তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাধ্যমে আমার সাথে যোগাযোগ করেন। তাদের মসজিদে রমজানের তারাবি নামাজের জন্য আমন্ত্রণ জানান।’

কামরুল জানান, পাসপোর্ট ও ব্যক্তিগত সনদপত্র দেখতে চান তারা। প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেয়ার পর সরকারিভাবে স্পেশাল ভিসা দিয়ে তাকে বিমানের টিকিট দেয়া হয়।

তিনি জানান, হুলুমালে অবস্থিত মসজিদ আল শেখ কাসিম বিন আল-থানিতে অতিথি ইমাম হিসেবে প্রথম রমজানের তারাবির নামাজ পড়ান। এটি মালদ্বীপের মধ্যে অন্যতম নান্দনিক ও বড় মসজিদ। সেখানে একসাথে এক হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মুসল্লী নামাজ পড়তে পারেন।

কামরুল বলেন, ‘মালদ্বীপে অনেক বাংলাদেশি রয়েছেন। যারা এ রমজানে দেশে যাওয়া ইচ্ছা করেছিলেন। কিন্তু, আমি সেখানে যাব শুনে ও নামাজ পড়ানোর পর অনেকে আর দেশে যাননি। তারা নিয়মিত আমার পেছনে তারাবির নামাজ পড়ছেন। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে মক্কার মসজিদুল হারামের ইমাম শায়খ আবদুর রহমান আল-সুদাইসের সুরে তেলাওয়াতের কারণে সুদাইস বলে ডাকেন। এতে নিজেকে গর্বিত মনে হয়। আমি কোরআন খতমের শুরু থেকেই তাকে খুব বেশি অনুসরণ করতাম। তার তেলাওয়াতের ধরন, সুর ও কণ্ঠ আয়ত্তে আনার চেষ্টা করতাম।’

তিনি আরো বলেন, ‘শুরুতে হিরিলান্দো আইল্যান্ডের মসজিদ আল লুবাবীতে নামাজ পড়ানোর কথা ছিল। পরবর্তী ফুভাহমুলা সিটির সাবেক সাংসদ আমন্ত্রণ করে, মিনিস্ট্রি থেকে কথা বলে ট্রান্সফার করে নেন মাসজিদ আল ইনারায়, যেটি ফুভাহমুলা সিটিতে। বর্তমানে এ মসজিদেই ২০ রাকাত তারাবির পাশাপাশি আট রাকাত কিয়ামুল লাইলের নামাজ পড়াচ্ছি।’

মালদ্বীপে অবস্থানরত বাংলাদেশি ও সেখানকার স্থানীয়দের আন্তরিকতা ও ভালবাসা পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন কামরুল।

এ দিকে, কামরুল আলমের কোরআন তেলাওয়াতের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সুদুর যুক্তরাষ্ট্রেও। সেখানকার প্রবাসীদের মধ্যেও কামরুল সম্পর্কে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

কামরুল আলমের সুললিত কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত সম্পর্কে জানতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নিউইয়র্কের বাসিন্দা রেবেকা সুলতানা নীতা বলেন, ‘কামরুলকে আমার নিজের সন্তানের মত মনে হয়। তার সুমধুর কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত শুনে আমিও অভির্ভূত হয়েছে। আমরা চাই, আমেরিকাতেও আমরা কামরুলের কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত শুনব। তার কোরআন তেলাওয়াতের সুনাম এক দিন পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে- আমরা এ প্রত্যাশা করি।’