ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাংলাদেশী কমিউনিটির পরিচিত মুখ, তরুণ উদীয়মান ডেমোক্র্যাট, জুডিশিয়াল ডেলিগেট মাহতাব খানের পিতা মাহবুব খান শাহেদ ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়ে তিনি বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার সাভারের এনাম মেডিক্যাল হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র, এক কন্যা এবং চার ভাই ও এক বোন রেখে গেছেন।
প্রসঙ্গত, মাহবুব খান শাহেদ প্রবাস জীবনে নিউইয়র্কে বাংলাদেশী কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
সাভারের সন্তান মাহবুব খান শাহেদ ১৯৯৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং কুইন্সের জ্যামাইকায় বসবাস শুরু করেন। ব্যক্তিগত প্রয়োজন আর দেশের টানে পরিবারকে নিউইয়র্কে রেখে প্রায় দুই বছর আগে ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারী তিনি বাংলাদেশে যান এবং সাভারে নিজ বাসায় বসবাস করতে থাকেন। এরই মধ্যে ওমরাহ করতে গত ২৫ নভেম্বর তিনি সৌদি আরব যান এবং ওমরাহ শেষে গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকায় ফিরেন।
মরহুমের স্ত্রী সৈয়দা রওশন আক্তার কাজল জানান, নিউইয়র্কে তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এছাড়াও প্রয়োজনে মোবাইলে সাভারের বাড়ীর পরিস্থিতি দেখভাল করার জন্য ভিডিও কানেকশন ছিল তাদের সাথে। ফলে যখন ইচ্ছে তখনই সাভারের বাসার পরিস্থিতি লাইভ দেখা যেত। ওমরাহ পালন শেষে তিনি আগের চেয়ে অনেক বেশী হাসি-খুশি ছিলেন এবং আগামীতে সময়-সুযোগ মত পরিবার নিয়ে হজ করার কথাও বলেন।
তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে (বাংলাদেশ সময়) তার সাথে লাইভে কথা বলার পর মাহবুব খান শাহেদ ঘুমাতে যান। পরবর্তী তিনি ঠিকমত ঘুমাচ্ছেন কিনা তা দেখতে ঐ রাতেই আবার ভিডিও অন করলে তিনি (কাজল) দেখতে পান যে, তিনি (মাহবুব খান শাহেদ) বিছানা থেকে উঠার চেষ্টা করছেন এবং বিছানায় একটু বমিও করেছেন। কিন্তু তিনি বিছানা থেকে ঠিকমত উঠতে পারছেন না। তার এই অবস্থা দেখে একই ফ্লাটে থাকার তার নিকটাত্বীয়দের ফোন কল করেন এবং তারা এসে মাহবুব খান শাহেদকে তাৎক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স ডেকে এনাম মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে কর্মরত চিকৎসকরা জানান মাহবুব খান শাহেদ ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন। পরবর্তী তাকে আইসিইইতে স্থানান্তর করা হয় এবং এক পর্যায়ে লাইভ সাপোর্ট দিতে হয়। পরবর্তী পরিবারের সাথে পরামর্শ করে মরহুমের পুত্র মাহতাব খান ও কন্যা মৌয়ের উপস্থিতিতেই তার লাইভ সাপোর্ট খুলে নিলে মাহবুব খান শাহেদ শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
নামাজে জানাজা ও দাফন: পরবর্তী মাহবুব খান শাহেদের নামাজে জানাজা স্থানীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সভারের চাপাইন কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। সৈয়দা রওশন আক্তার কাজল তার স্বামীর জন্য সবার দোয়া কামনা এবং তার সাথে কারো মন-মালিন্য বা তার ব্যবহারে কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তা মাফ করে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
শোক প্রকাশ: কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট মাহবুব খান শাহেদের ইন্তেকালে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন। শোক প্রকাশকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন নিউইয়র্ক সিটির কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, বাগ’-এর সভাপতি জয়নাল আবেদীন, প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসী ইউএসএ’র উপদেষ্টা খন্দকার আশেক শামীম, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার আহসান হাবীব, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম সনি, কাজী ফৌজিয়া, মিলন রহমান, আনাফ আলম।