মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

মেমোরিয়াল ডে/দেশকে সেবা দিয়ে প্রাণ উৎসর্গীকৃতদের এ শহর আজীবন স্মরণ করবে

রবিবার, মে ২৬, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর মে মাসের শেষ সোমবার অনুষ্ঠিত হয় মেমোরিয়াল ডে। যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করার সময় মারা যাওয়া সামরিক কর্মীদের সম্মানের জন্য একটি উৎসর্গীকৃত দিন এটি। নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস্ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তাদের।

শুক্রবার (২৪ মে) এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশকে সেবা দিয়ে রক্ষা করার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের সাহসিকতা ও উৎসর্গের একটি বার্ষিক উদযাপন মেনোরিয়াল ডে। আমরা আমাদের দেশের মেরিন সার্ভিস সদস্যদেরকে অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে স্মরণ করি। একজন দেশপ্রেমিক আমেরিকান এবং একজন গর্বিত মেয়র হিসাবে মেমোরিয়াল ডে উইকএন্ডে আমাদের সঙ্গে যোগদানকারী প্রতিটি পরিষেবা সদস্যকে আমি ব্যক্তিগতভাবে স্বাগত জানাতে চাই। মেমোরিয়াল ডে সপ্তাহটি নিউইয়র্কে গ্রীষ্মের আনুষ্ঠানিক শুরুর চেয়ে বহু বেশি কিছু বোঝায়।’

জাতির প্রতি নৌবাহিনী, মেরিন ও কোস্ট গার্ডের সেবা করার প্রতিশ্রুতি, তাদের সাহসিকতা ও উৎসর্গকে সম্মানিত করতে ধন্যবাদ জানানো শহরের একটি উপায় বলে জানান এরিক অ্যাডামস্। ‌তিনি বলেন, ‘তাদের শ্রম ও ত্যাগের কারণেই আজ আমাদের জীবনযাপন ও আমাদের মূল্যবোধকে সংরক্ষণ করতে পেরেছি।’

প্রবীণ সেনা ও তাদের পরিবারকে সাহায্য করার জন্য নিবেদিত একটি পৃথক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে নিউইয়র্ক সিটি, এটি দেশের প্রথম মিউনিসিপ্যালিটি। অ্যাডামস্ বলেন, ‘তাদের অবদানে ধন্যবাদ জানানোও কম হয়ে যাবে। তারা আজ আমাদের সঙ্গে নেই, কিন্তু আমরা সর্বদা তাদের মনে রাখব৷ নিউইয়র্ক সিটি, একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর ও স্বাধীনতার একটি বৈশ্বিক আলোকবর্তিকা। যারা আমাদের দেশ এবং এর মূল্যবোধ ও আদর্শকে রক্ষা করেছে, তাদের জন্য সর্বদা সম্মান করবে এ শহর ও দাঁড়াবে। এছাড়াও, যারা বিদেশী প্রতিপক্ষের দ্বারা লক্ষ্যবস্তু ছিল ও পরবর্তী যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের স্মরণ করার জন্য, আমাদের একটি বিশেষ বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’

এরিক অ্যাডামস্ জানান, এ কারণেই তারা ৯৯জন নিউইয়র্ক সিটির সামরিক কর্মীদের স্মরণে একটি নতুন স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছেন; যারা নাইন/এলাভেনের পরে প্রাণ হারিয়েছিলেন। স্মারকটি কুইন্সের হোয়াইটস্টোন আশেপাশে ওয়াটারফ্রন্টের কাছে তৈরি করা হবে। স্মৃতিসৌধটি কয়েক হাজার নিউইয়র্কবাসীকে শ্রদ্ধা জানাবে; যারা অতীতের যুদ্ধে দেশের সেবা করেছেন, সেই সঙ্গে ইরাক ও আফগানিস্তান সংঘাতে যারা জীবন দিয়েছেন- এমন নতুন প্রজন্মের ব্যক্তিদের প্রতি।

অ্যাডামস্ তার পূর্ব অভিজ্ঞতা স্মরণ করে বলেন, ‘আমি প্রায় সময় আমার চাচা জোর মত অন্যান্য ভেটেরান্সদের কথা ভাবি, যিনি ভিয়েতনামে নিহত হওয়ার সময় মাত্র ১৯ বছর বয়সী ছিলেন। তিনি একজন যুবক ছিলেন; যিনি তার দেশকে ভালবাসতেন এবং কে রাষ্ট্রপতি ছিলেন, তা ভাবেননি। বরং, নির্বিশেষে তিনি দেশকে সেবা করতে প্রস্তুত ছিলেন। কারণ, তিনি ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক। যখন আমি সমীক্ষায় দেখি যে, ৫২ শতাংশ আমেরিকানরা এ জাতিকে বিদেশী প্রতিপক্ষের দ্বারা আক্রমণ করলে রক্ষা করবে না বলে ধারণা দেয়, তখন এটি আমার হৃদয়কে অশ্রুশিক্ত করে দেয়। আমি চাই, প্রতিটা নিউইয়র্কের মানুষ জানুক যে, আমি ৪৮ শতাংশের একজন। আমি নিশ্চিত যে, যদি প্রয়োজন হয়, তবে নিউইয়র্কবাসীরা এ শহর ও নাগরিকদের জন্য বহু কিছু ত্যাগ করবে। আমি নাইন/এলাভেনের সময় এটি প্রত্যক্ষ করেছি, যখন সম্পূর্ণ অপরিচিত ব্যক্তিরা একে অপরকে সাহায্য করার জন্য একত্রিত হয়েছিল এবং আমি ফের এটি প্রত্যক্ষ করছি, যখন লোকেরা ঘৃণা ও বিভাজনের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এ মেমোরিয়াল ডে-তে আসুন, আমরা আমাদের পরিবারের আঙ্কেল জোসকে স্মরণ করি, যারা তাদের নীতি ও মূল্যবোধে বেঁচে ছিলেন এবং গর্ব ও সাহসের সঙ্গে দেশের সেবা করেছিলেন। আসুন, আমরা নিজেদের ও একে অপরের মধ্যে আমেরিকান চেতনাকে পুনঃপ্রজ্জ্বলিত করি এবং সেই মূল্যবোধগুলিকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিই। দেশপ্রেম শুধু বলা নয়, আরো বেশি কিছুকে বোঝায়। এটি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে আশাবাদ, একসঙ্গে আরো ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যত গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি।’

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতিসত্তার সর্বশ্রেষ্ঠ শহরে গণতন্ত্র ও মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত বলে মনে করেন অ্যাডামস্। যারা সেবা পরিবেশন করেন, তাদের প্রতি আরো একবার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান অ্যাডামস্।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি, মেমোরিয়াল ডে সপ্তাহে প্রতিটি একক পরিষেবা সদস্য আমাদের সঙ্গে দুর্দান্ত সময় কাটবেন। আমি আশা করছি, আপনাদের সকলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে ও আপনার পরিষেবাকে সম্মান জানাতে নিউইয়র্কের সকলে আমার সঙ্গে যোগ দেবে।’

‘আপনি আমাদের জাতির জন্য যা করেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ এবং আমি প্রার্থনা করি, ঈশ্বর নিউইয়র্ক ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়কেই আশীর্বাদে রাখবেন।’