মস্কো, রাশিয়া: যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে হামলা করতে ইউক্রেনকে অনুমোদন দিয়েছে ওয়াশিংটন। বাইডেন প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে ইউক্রেন সংঘাত আরো বাড়তে পারে এবং এ ধরনের পদক্ষেপ তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার শীর্ষ আইনপ্রণেতারা।
রোববার (১৭ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তা ও একটি সূত্র জানিযেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ সদস্য আন্দ্রেই ক্লিশাস মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে বলেন, ‘পশ্চিমারা এমন একটি মাত্রায় উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে যে, এটি এক রাতে ইউক্রেন রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ ধ্বংস ডেকে আনতে পারে।’
পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির প্রথম ডেপুটি ভ্লাদিমির জাবারভ বলেন, ‘রাশিয়া দ্রুত ও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এটি তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরুর দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।’
এর পূর্বে এ ধরনের পদক্ষেপের বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোকে বার বার সতর্ক করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি একাধিক বার বলেছেন, ‘রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোর অর্থ হচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটো সামরিক জোটের সরাসরি জড়িয়ে পড়া।’
পুতিন আরো বলেছেন, ‘এ ধরনের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।’
কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে রোববার (১৭ নভেম্বর) রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে হামলা করতে ইউক্রেনকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গেল কয়েক মাস ধরেই ‘এটিএসিএমএস’ নামের ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। একই সাথে তিনি রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোরও অনুমতি চাচ্ছিলেন।
রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার বিষয়ে রোববার (১৭ নভেম্বর) জেলেনস্কি বলেন, ‘এ ধরনের অভিযান ঘোষণা জানিয়ে শুরু করা হয় না। যখন প্রয়োজন হয়, তখন ক্ষেপণাস্ত্র নিজে থেকেই কথা বলবে।’
রয়টার্স বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া এটিএসিএমএস মিসাইলগুলো ১৯০ মাইল (৩০৬ কিলোমিটার) দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘দূরপাল্লার অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার গভীরের হামলা চালানোর অনুমতি ইউক্রেন যুদ্ধের গতিপথ বদলে দিতে পারে।’