সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্রের গাজানীতির কঠোর সমালোচনা সাবেক কর্মকর্তার

রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের গাজানীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন দেশটির সাবেক এক সরকারি কর্মকর্তা। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সাকেক এই কর্মকর্তা বলেছেন, `ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোন মাথা ব্যথা নেই।’

এক বছরেরও সময় বেশি সময় ধরে গাজা উপত্যকায় বিরামহীন সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এতে সীমাহীন দুর্ভোগের মুখে পড়েছে লাখ লাখ নিরীহ ও নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি।

ইসরাইলের এই আগ্রাসনে অস্ত্র সরঞ্জাম সরবরাহসহ সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ইসরাইলের হয়ে মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হামলাও চালাচ্ছে মার্কিন বাহিনী।

ফিলিস্তিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই একপেশে নীতির চরম সমালোচনা করেছেন দেশটির ফিলিস্তিনি বিষয়ক সাবেক ডেপুটি পলিটিক্যাল কাউন্সেলর মাইক কেসি। বলেছেন, ‘তিনি এমনটা আগে কখনও দেখেননি।’

এমনকি জেরুজালেমে দায়িত্ব পালনকালে নিজের কূটনৈতিক অভিজ্ঞতাকে ‘অপমানজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন মাইক কেসি।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কেসি আরও বলেন, ‘আমরা যেভাবে ইসরাইলি সরকারের দাবির কাছে নতিস্বীকার করছি এবং ইসরাইলি সরকার যা করছে তার সমর্থন চালিয়ে যাই, যদিও আমরা জানি এটি ভুল, তা সত্যিই লজ্জাজনক।’

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকার তার নিজ স্বার্থের ওপর ইসরাইলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে। আমি অন্য কোন দেশে এমনটা কখনও দেখিনি।’

মার্কিন সরকারের ইসরাইলের প্রতি অটল সমর্থনের প্রতিবাদে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর জুলাই মাসে পদত্যাগ করেন কেসি। তিনি বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের ধ্বংসাত্মক সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে অনেক আগেই অবস্থান নেয়ার প্রয়োজন ছিল তার।’

গাজার যুদ্ধ শুরুর পর ইসরাইলের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের সামরিক ও কূটনৈতিক সমর্থনে ক্ষুব্ধ হয়ে অনেকে পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যে কেসি সবশেষ কর্মকর্তা, যিনি মার্কিন সরকারে গাজা নীতির প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন। চলতি সপ্তাহে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রথম তার পদত্যাগের খবর প্রকাশিত হয়।

গাজায় গত ১৪ মাস ধরে ইসরাইলের বিরামহীন সামরিক আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এই সংঘাত গাজাকে গভীর মানবিক সংকটে নিমজ্জিত করেছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ ও শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ এনেছে।

কিন্তু, বাইডেন প্রশাসন বলছে, ‘গাজায় তেমন কিছুই ঘটেনি।’

ইসরাইলের কাছে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করার আহ্বান জানানো হলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে বাইডেন প্রশাসন। এর ফলে ফিলিস্তিনের প্রতি সহানুভূতিশীলদের মধ্যে ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তারা বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ‘জেনোসাইড জো’ বলে অভিহিত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর ইসরাইলকে অন্তত তিন দশমিক আট বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দেয়। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সম্প্রতি এক হিসেবে দেখিয়েছেন, গাজায় হত্যাযজ্ঞ শুরু হওয়ার পর বাইডেন প্রশাসন ইসরাইলকে অতিরিক্ত ১৭ দশমিক নয় বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দিয়েছে।