ঢাকা: জাতীয় সমন্বয় কমিটির আয়োজনে সোমবার (২৮ মে) দুপুরে তোপখানা রোড়ে ‘আমেরিকার ভিসা নীতিতে লজ্জিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন মোজাম্মেল মিয়াজী। লিখিত বক্তব্য পড়েন কমিটির প্রধান সম্মনয়ক হানিফ বাংলাদেশী।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ মা ও বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাড়িয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীনতার এ ৫২ বছর ধরে চলমান নীতি নৈতিকতা বির্বজিত রাজনীতি আর রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসা দলগুলোর কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার কারণে বহিবিশ্বে আজ বাংলাদেশের আত্মমর্যাদা বিনষ্ট হচ্ছে। ৫২ বছর ধরে তিন তিন বার করে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসা দলগুলোর কেউই এর দায়ভার এড়াতে পারেনা। যেহেতু, তিন বার করে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েও একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারেনি, নিবিঘ্ন ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি, দুর্নীতি মুক্ত দেশ গঠন করতে পারেনি, বিচার বিভাগকে দলীয় প্রভাব মুক্ত রাখতে পারেনি, এ ব্যর্থতার দায় কোন রাজনৈতিক দল এড়িয়ে যেতে পারে না। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে চলমান কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এ ভিসানীতির হুমকিতে জনগণ কিছুটা খুলি হলেও এ ভিসা স্যাংশন বাংলাদেশের জন্য চরম লজ্জাজনক। আমাদের দেশের কৃষক উৎপাদনশীল, শ্রমিকরা পরিশ্রমী, ছাত্র যুবকেরা মেধাবী, কিন্ত দূবৃত্তায়িত রাজনীতি সব অর্জনকে ধংস করছে, বহিবিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা নষ্ট করছে। আমাদের স্বাধীনতার মূল লক্ষ্যেই ছিল সাম্য মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু, দুঃভাগ্য ৫২ বছর পরে এসে বিদেশিদের কাছ থেকে আমাদের ভোট গণতন্ত্র আইনের শাসনের উপর চবক শুনতে হবে- এটা জনগণ কখনো আশা করেনি।’
হানিফ বাংলাদেশী বলেন, ‘রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে। কিন্তু, বাংলাদেশের রাজনীতি প্রতিহিংসা পারায়ণ ও অবিশ্বাসের সংস্কৃতি বিদ্যমান। এক দল বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে নালিশ করে আরেক দল সাধু সাজতে বিদেশে পিআর নিয়োগ করে বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। অবিশ্বাসের এ রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্ঠাগুলোকেও বির্তকিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এ ভিসা স্যাংশন হুমকিতে জনগণ ভিত নয়। তবে, যারা হাজার হাজার কোটি টাকা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধ পাচার করেছে, তারাই ভীত হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘৫২ বছর ধরে যে দলগুলো দেশের জনগণের নাগরিক অধিকার হরণ করে আসছে, ভোটের অধিকার ক্ষুন্ন করছে, গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, তাদেরকে সকলকে এ দেশের জনগনের ভয়কট করা উচিত এবং তাদেরকে দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আনার দরকার। বাংলাদেশ কারা পরিচালনা করবেন. সেটা ঠিক করবে বাংলাদেশের ১৭ কোটি জনগন, বিদেশি কোন প্রভু রাষ্ট্র নয়। দেশে ভোট গণতন্ত্র আইনের শাসনের মান উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন জাতীয় সমন্বয়।’
শিমুল পারভেজ, মহিবুল্লাহ চৌধুরী, ইউছুফ শাকিল, রেশমা আক্তার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।