রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধী অঞ্চল/হারিকেনেও হারবে না ফ্লোরিডার ব্যবকক রাঞ্চে

শনিবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ব্যবকক রাঞ্চে, ফ্লোরিডা, যুক্তরাষ্ট্র: পরিকল্পিত সিটি। সমতল থেকে গড়ে ছয় মানুষের সমান উঁচু। পরিচ্ছন্ন সড়কে মোড়া চার পাশে অসংখ্য গাছ। মাঝখানের সবুজে ঘেরা ঘাসের ওপর সাদা রঙের সারি সারি বাড়ি। নকশা-কাঠামোতে সব বাড়িতেই একই আদল। কিছু কিছু বাড়ির পাশেই ছোট ছোট হ্রদ। শিশুদের খেলাধুলার জন্য পার্ক, সাইকেল চালানোর রাস্তা। ছবির মত সুন্দর শহরটির নাম ব্যবকক রাঞ্চে। যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্লোরিডায় অবস্থিত। সাজানো গোছানো ৭২ বর্গকিলোমিটারের (১৮ হাজার একরের) শহরটি ‘বিশেষ মডেলে’ তৈরি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধী অঞ্চলটি বেশ ভেবেচিন্তে নির্মাণ করা হয়েছে। এমনকি সভ্যতা বিনাশী শক্তিশালী হারিকেন ঝড়ের কাছেও হারবে না ফ্লোরিডার এই সুন্দর শহর। খরব এএফপির।

ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এই অঞ্চলকে দুর্যোগমুক্ত রাখতেই স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে শহরটি তৈরির পদক্ষেপ নেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। দুটি বিষয় মাথায় রেখে গড়ে ওঠে শহরটি। প্রথমত, সেখানে অবস্থিত বাড়িঘরগুলো টেকসই ও মজবুত হতে হবে। দ্বিতীয়ত, হারিকেনের মত দুর্যোগ সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে। এ লক্ষ্যে বন্যা থেকে বাঁচতে প্রথমেই শহরটি সমুদ্রপিষ্ঠ থেকে নয় মিটার (৩০ ফুট) উপরে নির্মিত হয়েছে। শহরটিতে বেশ কিছু জলাভূমিও রয়েছে; যা অতিরিক্ত পানির জন্য স্পঞ্জ হিসেবে কাজ করে।

স্থানীয় হ্রদগুলো জলাভূমির সাথে পাম্পের সাহায্যে সংযুক্ত থাকে, যা উপচে পড়া পানি টেনে নেয়। আবার পানি শহরে ঢুকলেও তা বাড়িঘরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে না। শহরটি ‘হারিকেন প্রতিরোধী’ কিনা তা সর্বপ্রথম পরীক্ষা করা হয় ২০২২ সালে। সে বছর ‘ইয়ান’ নামক শক্তিশালী ক্যাটাগরি-৪ হারিকেন আঘাত হানে। ১৫০ মাইল প্রতি ঘণ্টা বাতাস ও প্রবল বৃষ্টিতে ব্যবককের প্রতিবেশী শহর ফোর্ট মায়ার্স বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল। ঘটনায় প্রায় ১৫০ জনের মৃত্যু হয়। কিছু কিছু রাজ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল ১১০ বিলিয়ন ডলার। তবে শক্তিশালী সেই হারিকেনে উপকূলীয় শহর ব্যবকক রাঞ্চের বাসিন্দাদের তিল পরিমাণ ক্ষতিও হয়নি।

এমনকি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মত ঘটনাও ঘটেনি। স্বপ্নের এ শহরটি নির্মাণ করেছেন আমেরিকান ফুটবল খেলোয়াড় এবং ডেভেলপার সিড কিটসন। তার কোম্পানি শহরটিতে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করেছেন বাসিন্দাদের। এমনকি ব্যবকক শহরটিতে ছয় লাখ ৮০ হাজার সৌর প্যানেল রয়েছে; যা এরমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সৌরশক্তি চালিত শহর হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ২০১৮ সালে নির্মিত শহরটিতে সাত হাজার ২০০ জন বাসিন্দা ছিল।

সময়ের পরিক্রমায় শহরটি এখন প্রসারিত হচ্ছে। বর্তমানে এদের জনসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, ব্যবকক রাঞ্চের জীবনযাত্রা অনেকের সামর্থ্যরে বাইরে। সেখানকার আবাসন খরচ সাধারণের নাগালের বাইরে। শহরটির একেকটি বাড়ির সর্বনিম্ন দাম তিন লাখ ডলার।

সিড কিটসন বলেন, ‘আপনাকে নানা ধরনের আবাসনের নানা মূল্য দিতে হবে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি না পারলে শহরটি আপনার জন্য নয়।’

বর্তমানে সেখানে অবস্থানরত বাসিন্দারাও নিশ্চিন্তে থাকেন।