ঢাকা: দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৪ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত। তাদের নামে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ মামলা করে।
সোমবার (৩ জুন) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। এ দিন, দুদক প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন নয়া এ তারিখ ধার্য করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে তিন তলা বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় ২০২২ সালের ৩১ মার্চ এসকে সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে মামলা হয়। সংস্থাটির উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদি হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা করেন। মামলায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১২ জুন দুই লাখ ৮০ হাজার ডলারে (সে সময়ে ৮৬ টাকা ডলার ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় দুই কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার টাকা) এসকে সিনহার জন্য তিন তলা একটি বাড়ি কেনেন তার ভাই অনন্ত কুমার। বাড়িটি কেনার পূর্বে ৩০ বছরের কিস্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে অনন্ত সিনহা নিজের জন্য এক লাখ ৮০ হাজার ডলার ব্যাংক ঋণ নিয়ে আরো একটি বাড়ি কিনেছিলেন। পেশায় দন্ত চিকিৎসক অনন্ত প্রথম বাড়িটি ৩০ বছরের কিস্তিতে কিনলেও নিজের ভাইয়ের জন্য বাড়ি কেনেন নগদ অর্থে।
মামলার বিবরণে আরো জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৫ মার্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত অনন্ত কুমার সিনহার নিউ জার্সির প্যাটারসনে অবস্থিত ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকের একটি হিসাবে ৬০ হাজার ডলার জমা হয়। ওই একই হিসাবে অন্য একটি উৎস থেকে একই বছরের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন পর্যন্ত এক লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৮ ডলার জমা হয়। এসকে সিনহার বাড়ি কেনার বা বিদেশে অর্থপাচারে বৈধ কোন উৎসের সন্ধান পায়নি দুদক।
এর পূর্বে, ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর ঢাকার ‘বিশেষ জজ আদালত-৪’-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এসকে সিনহাকে ১১ বছরের কারাদন্ড দেন। এরমধ্যে তাকে মানিলন্ডারিংয়ে সাত বছর ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় চার বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। তবে, দুই ধারার সাজা একসাথে চলবে বলে ১৮২ পাতার রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক। এছাড়া, এসকে সিনহার ৭৮ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়।