ওয়াশিংটন: যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬-২০২০ সাল পর্যন্ত যেসব গণ হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার অর্ধেক ক্ষেত্রে হামলাকারী ব্যক্তিগত সংকট, ঘরে অশান্তি ও কর্মক্ষেত্রে জটিলতায় ভুগছিলেন বলে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ‘ন্যাশনাল থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট সেন্টার’ এর নতুন একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। আগেই সতর্ক সংকেতগুলো চিহ্নিত করে সংহিসতা প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ ছিল ওই প্রতিবেদনে লক্ষ্য। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনটি তৈরি করতে তারা ১৭৩টি ঘটনা যেখানে তিন বা তার বেশি মানুষ হতাহত হয়েছে, সেগুলো পরীক্ষা করে দেখে। যেখানে কর্মক্ষেত্র, স্কুল, উপাসনালয় ও গণ পরিবহনসহ আরো কয়েকটি স্থান লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। ওই সব হামলায় ৫১৩ জন নিহত ও এক হাজার ২৩৪ জন আহত হয়েছেন।
সেন্টারের প্রধান লিনা আলথারি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাধারণত অপরাধীদের মধ্যে এমন আচরণ দেখা গেছে, যা অন্যদের আগে থেকে সমস্যা চিহ্নিত করতে সাহায্য করতে পারে।’
তিনি বলেন, (হামলাকারীদের মধ্যে) সহিংসতার প্রতি আগ্রহ, পূর্ববর্তী গণ হামলাকারীদের প্রতি আগ্রহ, তাদের সম্পর্কে পোস্ট করা, তাদের সম্পর্কে অন্যদের সাথে কথা বলা, নিজের কর্মক্ষেত্রে অস্ত্র আনা, স্কুলে অস্ত্র আনা, সহকর্মীরা তাকে ভয় করা ও ক্রমাগত অভিযোগ করে যাওয়া ইত্যাদি আচরণ দেখা যায়। ‘ঘুরে-ফিরে আমরা বার বার এসবই দেখতে পেয়েছি।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘৭৩ শতাংশ ক্ষেত্রে হামলার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। কারো কারো বেলায় আগ্নেয়াস্ত্র তার নিজের ছিল। এসব হামলায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হামলাকারী পুরুষ।’
হামলাকারীদের মনরোগে ভোগার ইতিহাসও অনেকক্ষেত্রেই পাওয়া গেছে। তারা আর্থিকভাবে অনিশ্চয়তা ভুগছিলেন অথবা গার্হস্থ্য সহিংসতায় জড়িত। বেশিরভাগ হামলাতেই অস্ত্র হিসেবে বন্দুককে বেছে নেয়া হয়েছে।
বলে রাখা ভাল, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় এ সপ্তাহে তিন দিনে দুই বার বন্দুক হামলায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন। উভয় হামলাতেই হামলাকারী বয়স্ক পুরুষ ছিলেন। কী কারণে তারা এভাবে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে নিরাপরাধ মানুষকে হত্যা করলেন, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা কছে পুলিশ।
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। অথচ, ভয়াবহ এ সংকট সমাধানে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে, সে বিষয়ে দেশটির আইনপ্রণেতারা এখনো একমত হতে পারেননি। ডেমোক্র্যাটিক পার্টি চায়, বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন আরো কঠোর করতে। অন্য দিকে, রিপাবলিকান পার্টি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ও নিরাপত্তা বাড়ানোর দিকে অধিক মনোযোগ দিতে চায়।