রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্র ওপেন আইসের উদ্যোগে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯৫তম জন্মদিন পালন

বৃহস্পতিবার, মে ৪, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: ‘যুক্তরাষ্ট্র ওপেন আইস’ এর উদ্যোগে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ‘সতত তোমারি কথা ভাবি এ বিরলে’ শীর্ষক ৯৫তম জন্মদিন পালন করা হয়েছে। বুধবার (৩ মে) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি মিলনায়তনে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ গানটি সমবেতভাবে গেয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এরপর তার সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ, ছড়া ও কবিতা আবৃত্তি এবং আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সদস্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সদস্য মুজাহিদ আনসারী। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা জাকির হোসেন বাচ্চু। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তার মায়ের স্মৃতি চারণ করেন জাহানারা ইমামের কনিষ্ঠ সন্তান সাইফ ইমাম জামি।

সাংস্কৃতিককর্মী সনজীবন কুমারের সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণ ও আলোচনায় অংশ নেন সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান, প্রগ্রেসিভ ফোরামের প্রাক্তন সভাপতি খোরশেদুল ইসলাম, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সংগঠক সাগর লোহানী, যুক্তরাষ্ট্র উদীচীর সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোনিয়েশনের নেতা শেখ আকতারুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারী বকুল, শহীদ সিরাজউদ্দিনের সন্তান তৈহিদ রেজা নুর, গবেষক ওবায়দুল্লাহ মামুন, সাবেক ছাত্র নেতা আলী হাসান কিবরিয়া অনু, খোরশেদ আলম, যুক্তরাষ্ট্র মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুলেখা পাল।

অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন গোপন সাহা। জাহানারা ইমামকে নিয়ে লেখা স্বরচিত ছড়া পড়েন ছড়াকার মনজুর কাদের ও লেখক-দর্পন কবীর। জাহানারা ইমামের জীবনী পড়েন নাট্যকর্মী দীলিপ মোদক ও তার লেখা শেষ চিঠি পাঠ করেন সাবেক ছাত্র নেতা শফিউল আজম। ব্যবস্থাপনায় ছিলেন হিরো চৌধুরী। অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন সাংবাদিক তোফাজ্জল লিটন। সংগীত পরিবেশন করেন রেজা রহমান, দুলাল, মুক্তি সরকার ও তুহিন মাহফুজ।

জাহানারা ইমামকে স্মরণ করতে গিয়ে বক্তারা বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে জাহানারা ইমামই সংগ্রাম করার সাহস যুগিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের শত্রু-মিত্র চিনতে শিখেয়েছে। যে রাষ্ট্র জাহানারা ইমামকে রাষ্ট্রদ্রোহী করে, সেই রাষ্ট্র আমাদের কাম্য ছিল না। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে মানুষ হয়ে থাকি, তা হলে এ রাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তন করা দরকার। সেই আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে গেলেই জাহানারা ইমামের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন জাহানারা ইমামের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

প্রসঙ্গত, একাত্তরের দিনগুলি’ গ্রন্থের রচয়িতা জাহানারা ইমাম মুক্তিযুদ্ধে পুত্র রুমী ও স্বামীকে হারান। রুমীর শহীদ হওয়ার সূত্র ধরেই তিনি ‘শহীদ জননী’র মযার্দায় ভূষিত হন। জাহানারা ইমাম ১৯২৯ সালের ৩ মে মুর্শিদাবাদ জেলায় জন্ম নেন ও ২৬ জুন আমেরিকার মিশিগানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার জীবনাবসান হলে ঢাকায় তাকে সমাহিত করা হয়।