বুধবার, ০৫ মার্চ ২০২৫

শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বিরোধ: নতুন বাজার ধরতে মরিয়া দেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা

মঙ্গলবার, মার্চ ৪, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: চীন-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক বিরোধের সুবিধা নিয়ে পোশাক রফতানির নতুন বাজার ধরতে মরিয়া বাংলাদেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা। চলতি অর্থবছরের সাত মাসে অপ্রচলিত বেশকিছু দেশে পোশাক রফতানি রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশে যেমন ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে, তেমনি ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সবশেষ তথ্যানুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশে ১১ দশমিক ৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হিসাবে ৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, কানাডায় ১৫ দশমিক ২৯ শতাংশ হিসাবে ৭৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং যুক্তরাজ্যে ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হিসাবে ২ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে।

বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘রফতানি বাড়লেও প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় এখনও আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। দেশে প্রতিনিয়ত গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ছে। এগুলো ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে বাজার ধরে রাখা কষ্টসাধ্য হবে।’

যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো প্রচলিত দেশগুলোর পাশাপাশি আগে তেমন পোশাক রফতানি হতো না এমন অপ্রচলিত দেশেও রেকর্ড রফতানি করেছেন বাংলাদেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ রোমানিয়া, লিথুনিয়া, শ্লোভানিয়া, গ্রিস ও সাইপ্রাসের মতো দেশে এক থেকে দেড়শ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে।

এছাড়া তুর্কি, দক্ষিণ আমেরিকার মেক্সিকো ও ব্রাজিলে রফতানি বেড়েছে তুলনামূলক বেশি। বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নতুন বাজারগুলোতে ব্যবসা শুরু হয়েছে। এটিকে ধরে রাখতে হবে।

এদিকে, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বিরোধ, একইসঙ্গে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর ট্যারিফ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের টানাপোড়েনে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে আলোর মুখ দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন শীর্ষ ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে নানা জটিলতার মাঝেও রফতানি ধরে রাখার চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের সভাপতি এসএম আবু তৈয়ব বলেন, ‘গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম সহনীয় পর্যায়ে রেখে প্রতিযোগী মনোভাব অব্যাহত রাখতে পারলে নতুন যে সম্ভবনা দেখা দিয়েছে, সেটি অনেকাংশেই কাজে লাগানো সম্ভব।’

প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত গত ৭ মাসে বাংলাদেশ থেকে ২৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে। অথচ আগের ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের এই সময়ে রফতানি হয়েছিল ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।