/ 
প্রিন্ট করুন
ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী জুলিয়েটা ভালস নয়েস বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরে দেশ পুনর্গঠন এবং বর্তমানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অন্তর্ভুক্তি ও উন্নয়নের পথ তৈরি করে বাকি পৃথিবীর কাছে আজ বাংলাদেশ একটি মডেল হিসেবে কাজ করছে।’
তিনি দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদানে বাংলাদেশি নেতৃত্ব ও উদারতার প্রশংসা করে বলেন, ‘২০১৭ সালে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বার্মায় সংগঠিত গণহত্যা থেকে বাঁচার জন্য পালিয়ে এসেছিল ও বাংলাদেশ তাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে। দেশের মানুষ তাদের সাহায্যের হাত ও হৃদয় উন্মুক্ত করে দিয়েছে।’
বাংলাদেশের ৫৩তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জুলিয়েটা ভালস নয়েস এসব কথা বলেন।
দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান।
অ্যাম্বাসেডর জুলিয়েটা ভালস নয়েস বলেন, ‘বন্ধুত্বের অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক পরিসরে সহযোগিতা জোরদার করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘দুই দেশ অভিবাসীদের ও শক্তিশালী ব্যবসায়িক সংযোগের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
’
তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ এবং আরো সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়তে প্রতিরক্ষা ও উন্নয়ন অংশীদারিত্ব আরো জোরদার করছে।
জুলিয়েটা নয়েস বলেন, তিনি গর্বিত যে, যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সংকটে একক বৃহত্তম দাতা দেশ।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত ও সম্প্রসারণে আগ্রহী- যাতে তারা স্থানীয় সম্প্রদায়ের চাহিদা মেটাতে ও রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানকে এগিয়ে নিতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্র ও সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জনগণকে তাদের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে অভিনন্দন জানান নয়েস।
মোহাম্মদ ইমরান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সব শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পথে যুক্তরাষ্ট্রকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান অংশীদার বলে মনে করে এবং শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্কের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সেক্রেটারি অফ স্টেট এন্টনি ব্লিঙ্কেনের বার্তায় উৎসাহ ও প্রশংসা বাংলাদেশকে উৎসাহিত করেছে।’
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে অকুণ্ঠ সমর্থন ও অঙ্গীকারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে তিনি বাংলাদেশের ধন্যবাদ জানান।
ভার্জিনিয়ার স্টেট সিনেটর জে চ্যাপম্যান পিটারসেন, বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক আহমদ কায়কাউস, ডেপুটি এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরো, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর, আফরিন আখতার, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, মার্কিন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ও জুলিয়েটা নয়েস এবং অন্যান্য অতিথিরা স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কেক কাটেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল-৩) শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।
