মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শিরোনাম

যে শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় প্রস্তুত ইরান

সোমবার, ফেব্রুয়ারী ১০, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

তেহরান, ইরান: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার শুল্কারোপের ঝড় না থামালে তার সাথে আলোচনায় ইরান বসবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।

মার্কিন গণমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক পোস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তবে, সাধারণ পরিস্থিতিতে আলোচনায় বসতে আপত্তি না থাকলেও, ট্রাম্পের ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতির মুখে আলোচনায় বসতে নারাজ তেহরান।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শাসনামলে কূটনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মূল হাতিয়ার হয়ে উঠছে ‘নিষেধাজ্ঞা ও শুল্কারোপ’। যখনই কোনো দেশ মার্কিন সরকারের প্রত্যাশা পূরণে অনীহা প্রকাশ করছে, তখনই তাদের দিকে ছুঁড়ে দেয়া হচ্ছে শুল্কারোপের হুঁশিয়ারি।

এই তালিকা থেকে বাদ যায়নি ইরানও। মার্কিন মসনদে বসা আগের শাসকরাও ইরানের ওপর নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ট্রাম্পও তার ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি অনুসরণ করে চীনে ইরানীয় অপরিশোধিত তেল বহনকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, ‘মূলত তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বিষয়ে ইরান প্রশাসনকে বাগে আনতেই এ ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন ট্রাম্প। যদিও, চাপের মুখে মার্কিনদের কাছে নত হতে নারাজ পেজেশকিয়ান প্রশাসন।’

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন গণমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক পোস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিরে রাজি হয়, তবে তাদের ভূখণ্ডে আর হামলা চালাবে না ইসরাইল।’

এদিকে, ইরান বলছে, ‘আলোচনায় বসতে আপত্তি নেই তাদের। তবে, তা কোনোভাবেই ট্রাম্পের দেয়া চাপের ফলে নয়।’

টেলিগ্রামে প্রকাশতি বিবৃতিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘তাদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আলোচনার বিকল্প নেই। তবে, তা যদি ট্রাম্পের ছুঁড়ে দেয়া নিত্যনতুন হুঁশিয়ারির কারণে হয় তবে তা চুক্তি কম, আত্মসমর্পণই বেশি হবে।’

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা না করার আহ্বান জানানোর পর আরাগচির এই বিবৃতি এলো।

ইরানের সব কৌশলগত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী খামেনি তার অবস্থানকে ন্যায্যতা দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ইরানের পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেছেন।

২০১৫ সালে ইরান আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিনিময়ে তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে একটি যুগান্তকারী চুক্তি করে। ২০১৮ সালে প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প একতরফাভাবে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন এবং ইউরোপীয় বিরোধিতা সত্ত্বেও তেহরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন।

এ অবস্থায় ট্রাম্প তার নতুন হাতিয়ারের ব্যবহার চালিয়ে গেলে ইরান আলোচনায় বসবে না বলে জানান আরাগচি।