এসএমএ এরফান: আব্দুল বারেক (ছদ্ম নাম) মধ্যবয়সী। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে জব করেন। কাজে সব সময় ব্যস্ত থাকতে হয়। ব্যস্ততার মধ্যেও স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতন। ইদানীং পায়খানার বিষয়ে একটু সমস্যা হচ্ছে। পায়খানা এখন আর পূর্বের মত নয়। পূর্বে প্রতিদিন সকালে নিয়মিত কোষ্ঠ পরিষ্কার হত। এখন তা কখনো সকালে কখনো বিকালে কখনো একাধিক বার হচ্ছে। আব্দুল বারেক তেমন পাত্তা দেননি। হয়তো খাওয়া-দাওয়ায় কোন সমস্যা হয়েছে, এ জন্য এমন সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু, সমস্যাটি তার আস্তে আস্তে বাড়তে লাগল। শেষে তিনি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের কাছে বিষয়টি খুলে বলেন।
চিকিৎসক পেট টিপেটুপে পরীক্ষা করে বললেন, ‘সব ঠিক আছে। আপনার মনে হয় খাবারে গণ্ডগোল আছে। তবুও, আপনার সন্দেহ হলে একজন বিশেষজ্ঞ কোলোরেক্টাল সার্জনের কাছে যান।’
এরপর যাব যাব করেও আব্দুল বারেক বেশ কিছু দিন পার করে দেন। তারপর হঠাৎ এক দিন তার পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। পেট একটু ফেঁপে যায়। তড়িঘড়ি করে তিনি একজন সার্জনের শরণাপন্ন হন।
সার্জন সাহেব তাকে পরীক্ষা করেন ও পাররেক্টাল অর্থাৎ পায়ুপথের পরীক্ষা করেই তার মুখ মলিন হয়ে যায়। কারণ, সেখানে একটি টিউমার পায়খানার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। সবকিছু পরীক্ষা করে দেখা গেল, সেটি রেক্টাল ক্যান্সার। রেক্টাল ক্যান্সার বর্তমানে বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে যাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন হয়ে গেছে। যারা শাকসবজি কম খাচ্ছেন, তাদের এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বারেক সাহেবের মত বাড়ছে।
প্রথম কথা হচ্ছে, রেক্টাল ও কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ কী? এ ক্যান্সার হওয়ার অনেক দিন পর্যন্ত কোন লক্ষণ দেখা না-ও দিতে পারে। তারপরও রোগের প্রথম দিকে রোগী খেয়াল করলে যেসব বিষয় বুঝতে পারবেন, সেগুলো হচ্ছে- পায়খানার অভ্যাস পরিবর্তিত হওয়া অর্থাৎ আগে যদি দিনে এক বার কোষ্ঠ পরিষ্কার হত, এখন তা কয়েক বার হওয়া। মলের প্রকৃতি পরিবর্তিত হওয়া অর্থাৎ পূর্বে স্বাভাবিক মল হলে এখন তা আগের থেকে কঠিন অথবা নরম হওয়া, কাল পায়খানা হওয়া, সকাল বেলা পাতলা পায়খানা হওয়া, মিউকাস যাওয়া, টয়লেটে যাওয়ার পর মনে হয় পায়খানা রয়ে গেছে আবার হবে, ওজন কমে যাওয়া, পেট ব্যথা করা ইত্যাদি।
লেখক: কোলরেক্টাল সার্জন, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড, শ্যামলী, ঢাকা।