যুক্তরাজ্য: যুক্তরাজ্যের অর্থ ও নগরবিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে সম্প্রতি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আবদুল মোতালিফ নামের এক ডেভেলপারের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় ফের আলোচনায় এসেছেন টিউলিপ। কে এই মোতালিফ এবং তিনি কেন টিউলিপ সিদ্দিককে ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছেন, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ফিন্যান্সিয়াল টাইমস টিউলিপ সিদ্দিকের ফ্ল্যাট উপহার পাওয়া নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
আবদুল মোতালিফ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন ব্রিটিশ নাগরিক। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ব্রিটেনে বসবাস করছেন। তার জন্ম ১৯৫৪ সালের নভেম্বর মাসে। তিনি ওকস কন্সট্রাকশন এবং এএম প্রোপার্টি সার্ভিস নামে দুইটি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে কোম্পানি দুটি বিলুপ্ত। তার পেশা ছিল কোম্পানি পরিচালনা। এসব কোম্পানির আবাসন ও নির্মাণ খাত আছে।
মোতালিফ বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এবং টিউলিপের খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। ৭০ বছর বয়সী আবদুল মোতালিফ বর্তমানে পূর্ব লন্ডনে মুজিবুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে থাকেন। মুজিবুল ইসলাম আওয়ামী লীগের একজন সাবেক সাংসদের সন্তান। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মুজিবুল ইসলাম স্বীকার করেছেন, তিনি ফ্ল্যাটটি ২০০১ সালে কিনেছিলেন। কিন্তু আর কোন তথ্য জানাননি তিনি।
আবদুল মোতালিফ ২০০৪ সালে টিউলিপ সিদ্দিককে উপহার হিসেবে কিং’স ক্রসের ওই ফ্ল্যাটটি উপহার দেন। সেখানে কয়েক বছর ছিলেন টিউলিপ। এরপর তার অন্য ভাই-বোনরা আরও বেশ কয়েক বছর ছিলেন। বর্তমানে ফ্ল্যাটটি ভাড়া দিয়েছেন টিউলিপ। সেখান থেকে বার্ষিক ৯০ হাজার পাউন্ড (এক কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা) উপার্জন হচ্ছে তার।
এ দিকে, এক লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় দুই কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা) দিয়ে ২০০১ সালের জানুয়ারিতে ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন আবদুল মোতালিফ। বেশ সস্তাতেই পেয়েছিলেন তিনি, কারণ একই বছর আগস্ট মাসে সেই ফ্ল্যাটটির পার্শ্ববর্তী আরেকটি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে ছয় লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে (বাংলাদেশি মুদ্রায় নয় কোটি ৭৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা)।
২০১৫ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে লেবার পার্টির হয়ে পূর্ব লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড আসন থেকে প্রথম বারের মত প্রার্থী হন টিউলিপ সিদ্দিক। তারপর থেকে এ পর্যন্ত ওই আসনে চার বার প্রার্থী হয়েছেন টিউলিপ, প্রতি বারই জয়ী হয়েছেন। তবে কোন নির্বাচনী হলফনামায় এ ফ্ল্যাটের ব্যাপারে উল্লেখ করেননি টিউলিপ।