সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

লাইফস্টাইল/প্রচণ্ড গরমে যেসব খাদ্য খাবেন

বুধবার, মে ১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

লাইফস্টাইল প্রতিবেদক: প্রচণ্ড তাপদাহে বিপর্যস্ত মানুষের জীবন। এ সংকটময় সময়ে সুস্থ থাকাটা চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। সুস্থ থাকতে প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর খাদ্য ও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয়। এ ছাড়া, শ্রমজীবী, অফিসগামী মানুষ, নারী ও শিশুরা স্কুলে টিফিনে কি খাবে, সেসব ব্যাপার সুচিন্তিতভাবে ঠিক করা জরুরি। গরমে সবার কম-বেশি নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এর অন্যতম কারণ হল ভুল খাদ্য খাওয়া। এ সময় কিছু খাদ্য শরীরের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে পারে।

গরমে খাদ্যের সচেতনতা নিয়ে কথা বলেছেন পর্যটন করপোরেশনের ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রোডাকশন (রন্ধন প্রশিক্ষণ) বিভাগের প্রধান শেফ জাহিদা বেগম।

গরমে প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, অতিরিক্ত ঘামের জন্য যেন শরীর পানিশূন্য না হয়ে পড়ে। অর্থাৎ, প্রথম পদক্ষেপ হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা। দৈনিক একজন সুস্থ মানুষের ন্যূনতম আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। তবে, পরিশ্রম ও রোদে অবস্থানের সঙ্গে আনুপাতিক হারে এর পরিমাণ বাড়তে পারে। এ ছাড়া লেবুর শরবত খাওয়া যেতে পারে।

সহজে হজম হয় বাচ্চাদের এমন খাদ্য দেয়া উচিত। টিফিন দেয়ার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, বেশি ঝোল বা তরল (ময়েশ্চার) না থাকে। কারণ, খাদ্যে যত বেশি ময়েশ্চার থাকবে, তত বেশি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া, খাদ্য যত শুকনো হবে, তত দূষণ ঝুঁকি কম হবে।

গরমে বাচ্চাদের মেয়োনিজযুক্ত খাদ্য টিফিনে না দেয়ায় ভাল। যেমন- চিকেন সেন্ডুইচ, বার্গার ইত্যাদি। বাচ্চাদের গরমে সকালের নাশতা হিসেবে টক দইয়ের সাথে কিছু স্ট্রবেরি ব্লেন্ড করে দিতে পারেন। সঙ্গে পরিমাণমত প্লেন কেক মিশিয়ে নিতে পারেন। বড়দের ক্ষেত্রে কেকের বদলে টকদই আর ফ্রুটসের সঙ্গে ওটস মিশিয়ে খেতে পারে। যা গরমে স্বস্তিদায়ক একটি খাদ্য।

এ ছাড়া, চিকেনের কাবাব অর্থাৎ কিমা চিকেন, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, আদা, রসুন, লবণ দিয়ে মেখে সাথে একটু ডিম আর ময়দা মিশিয়ে পেস্ট করে পানিতে কুক করে, রুটিতে রোল করে টিফিন হিসেবে দেয়া যেতে পারে। বড় কিংবা বাচ্চা যে কেউ খেতে পারবে এটি। সঙ্গে আলাদা করে সালাদ যোগ করা যেতে পারে।

অফিসে খাদ্যের জন্য কয়েক রকমের ডাল মিশিয়ে সবজি দিয়ে খিচুরি রান্না করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে, আমরা চালের বদলে খিচুরিতে ওটস ব্যবহার করতে পারি। সঙ্গে একটা সেদ্ধ ডিম এবং মাছ বা মাংস কম ঝোল দিয়ে রান্না করে, ফ্রিজে ঠান্ডা করে অফিসে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। অফিসে খাবারটা ফ্রিজে রাখতে পারলে ভাল, খাওয়ার পূর্বে গরম করে নিতে পারেন।

এর বাইরে বিভিন্ন ফল এবং টকদই ব্লেন্ড করে সঙ্গে একটু ফলের জুস এবং আইসক্রিম দিয়ে ব্লেন্ড করে বাচ্চাদের দেয়া যেতে পারে। তাতে বড় ও ছোটদের পুরো দিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে।

সেদ্ধ নুডলসের সঙ্গে সবজি বয়েল করে একটু লবণ ও গোলমরিচ, সঙ্গে কয়েক ফোটা অলিভ অয়েল দিয়ে অফিসে দুপুরের খাদ্য হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। সবজির তালিকায় এক টুকরো মিষ্টি কুমড়া বা লাউ রাখতে পারেন। প্রতিটি মিষ্টি কুমড়ায় আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। এ ছাড়া, ভিটামিন-সি, ফাইবার ও এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে এতে। যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

এ গরমে বাড়িতে যারা বয়স্ক আছেন, তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিতে হবে। বিশেষ করে তাদের খাবার প্লেটে। বয়স্ক ও বাচ্চাদের রোগ-প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেক খানি কম থাকে। মনে রাখবেন, ভাল খাবার অর্থাৎ পুষ্টিকর খাবার শরীরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে তা নয়, মানসিকভাবে স্বাস্থ্যবান রাখতে সহযোগিতা করে।

বয়স্কদের বিভিন্ন রঙের রঙিন শাক-সবজি, ফল দেয়া যেতে পারে। আঁশযুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে দিতে হবে। এতে বয়স্ক ব্যক্তিরা কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থেকে রেহাই পেতে পারেন। যেমন লাল চালের ভাত একটু নরম করে রান্না করা লাল আটা রুটি সিদ্ধ ডিম, পোচ করা মাছ, মাংস অর্থাৎ পানিতে কুক করে মাছ, মাংস বয়েল করে সবজির সঙ্গে একটু লবণ গোলমরিচের গুড়া কয়েক ফোটা অলিভ ওয়েল দিয়ে পরিবেশন করা যেতে পারে।

এ ছাড়া, রান্না করা সবজির সঙ্গে ডিম সিদ্ধ করে কেটে দেয়া যেতে পারে। পনির দেয়া যেতে পারে। তবে বয়স্ক ও বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দোকানে তৈরি করা অর্থাৎ প্রসেসড ফুড বাদ না দেয়া সম্ভব হলেও কিছুটা এড়িয়ে যেতে হবে। বিস্কুট, চিপস, বার্গার, পিৎজা বাজারে প্রাপ্ত বিভিন্ন ব্রান্ড ড্রিংস ও ঠান্ডা পানি এ গরমে সকলকেই এড়িয়ে চলতে হবে।