সোমবার, ২০ মে ২০২৪

শিরোনাম

শিল্পী জিহানের সৌজন্যে নিউইয়র্কে কুইন্স হাসপাতালে ম্যুরাল পেইন্ট পার্টি

সোমবার, আগস্ট ৭, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: বাংলাদেশি আমেরিকান তরুণ শিল্পী জিহান ওয়াজেদ। নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় তার আঁকা বেশ কয়েকটি ম্যুরাল সাড়া জাগিয়েছে কমিউনিটিতে। গেল এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির হেলথ অ্যান্ড হাসপাতাল বিভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন কুইন্স জেনারেল হাসপাতালের ম্যুরাল আঁকার জন্য মনোনিত করেছে জিহানকে। জ্যামাইকার এই হাসপাতালে দুটি দেয়ালে বিশালকায় দুটি ম্যুরাল আঁকবেন জিহান ওয়াজেদ। এ জন্য প্রাথমিক চুক্তিপত্র সম্পন্ন হয়েছে ও প্রস্তাবিত ডিজাইন দেয়া হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এ সপ্তাহেই ম্যুরাল আঁকা শুরু করবেন জিহান।

জিহানের এই ম্যুরাল অঙ্কনকে সামনে রেখে বুধবার (২ আগস্ট) কমিউনিটি ম্যুরাল পেইন্ট পার্টির করেছে কুইন্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের মূল ভবন চত্বরে দুপুর ১২টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পার্টি ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত।

জিহানের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে হাসপাতালের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন। তাৎক্ষণিকভাবে তারা টেবিলে বিছানো ক্যানভাসে পেইন্ট করেন ও তাদের মতামত তুলে ধরেন নির্দিষ্ট তালিকাপত্রে। এ সময় কুইন্স হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নেইল জি ম্যুরসহ অন্য কর্মকর্তারা সবাইকে অভ্যর্থনা জানান।

জিহানের বাবা ওয়াজেদ খান ও মাতা পারভীন আকতার পার্টিতে অংশ নেন। এছাড়া, পার্টিতে কুইন্স হাসপাতালে বাংলাদেশি ডাক্তার জুন্নুন চৌধুরী, ডাক্তার ইউসুফ আল মামুন ও কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন অংশ নেন।

জিহান চিত্রাঙ্কন ছাড়াও ভাস্কর্য, কোরিওগ্রাফি ও সৃজনশীল নতুন মিডিয়ার সাথে জড়িত। তিনি সিটির জ্যামাইকায় বেড়ে উঠেন। তার শিল্পকর্ম দেয়াল চিত্র ও নৃত্য দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং তিনিই প্রথম অগ্রবর্তী বাস্তববাদী শিল্পী, যাকে হেলথ এন্ড হসপিটালস কমিউনিটি ম্যুরাল প্রকল্পের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। কমিউনিটি ম্যুরাল প্রকল্প সিটির হাসপাতালের নান্দনিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশেও অবদান রাখে বলে প্রকল্পটি ইতোমধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

সিটির হেলথ এন্ড হসপিটালস নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে বৃহৎ শিল্প সংগ্রাহক হিসেবেও সমাদৃত। শিল্পকর্ম সংগ্রহের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল এই কাজগুলো এক নিরাময় পরিবেশ সৃষ্টি করে, দৃষ্টিসুখের সৃষ্টি করে। হাসপাতালের রোগী, তাদের পরিবার ও কর্মীদের নিরাময় সংস্কৃতিতে উৎসাহিত করতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।

জিহান ওয়াজেদের স্টুডিও ম্যানহাটানের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে। তার অন্যতম শিল্প কর্মের মধ্যে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ভবন, নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স বিলি জিন কিং ন্যাশনাল টেনিস সেন্টার, এস্টোরিয়ায় ১৭৭ ফিট দীর্ঘ ম্যুরাল ‘ওয়েলকাম এস্টোরিয়া’ মুর‌্যালটি অন্যতম। এছাড়া নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন বরোতে বড় বড় মুরাল্য এঁকেছেন জিহান ওয়াজেদ। মুর‌্যাল ছাড়াও নিউইয়র্কে ম্যানহাটানস্থ গ্যালারীতে তার বেশ কয়েকটি একক চিত্র প্রদর্শনী ব্যাপক সাড়া জাগায় মুলধারার দর্শকের মাঝে। স্টুডিওতে ছবি আঁকার পাশাপাশি তার নিজস্ব স্টাইলে ম্যুরাল আঁকছেন দেয়ালে। তার ম্যুরালের রয়েছে নিজস্ব ও নূতন ধারা। সম্প্রতি বাংলাদেশী আমেরিকান ব্যবসায়ীদের প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় জিহানের আঁকা বাংলাদেশ ম্যুরাল সাড়া জাগিয়েছে কমিউনিটিতে। ডাইভারসিটি প্লাজার দক্ষিণের ভবনটির প্রশস্থ দেয়ালে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ ম্যুরাল। পাল্টে গেছে স্থানটির চেহারা। গেল ১৯ মে বিকালে বাংলাদেশ ম্যুরাল উদ্বোধন করেন সিটি কাউন্সিল মেম্বার শেখর কৃষ্ণান। ‘সেলিব্রেশন অব ডাইভারসিটি: মেমোরি অব বাংলাদেশ’ নামের ম্যুরালটি উদ্বোধন করা হয়।