চট্টগ্রাম: পাঁচটি হলে শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) মুক্তি পাচ্ছে গণ অর্থায়নে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’ । ঢাকার বসুন্ধরা সিটিতে স্টার সিনেপ্লেক্স, যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমাস, রংপুরের শাপলা সিনেমা হল, চট্টগ্রামের সুগন্ধা ও সিলভার স্ক্রিনে এ চলচ্চিত্র মুক্তি পাচ্ছে।
রংপুর অঞ্চলের সুরেলা জনগোষ্ঠির যাপিত জীবন ও প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্কের রসায়ন নিয়ে ‘সাঁতাও’ নির্মাণ করেছেন খন্দকার সুমন। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন আইনুন পুতুল, ফজলুল হক ও আব্দুল্লাহ আল সেন্টু।
খন্দকার সুমন গণ মাধ্যমকে বলেন, ‘সাঁতাও নিয়ে দর্শক ও সিনেমা সংশ্লিষ্টদের ভালবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে, ঋণী করেছে। সবাই যেভাবে এসে সাঁতাওয়ের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, চলচ্চিত্রটি নিজেদের মনে করে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন, আমার মনে হচ্ছে তারা সবাই চলচ্চিত্রের অবিভাবক।’
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কারজয়ী চলচ্চিত্রটির মুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল হল মালিকদের দ্বিধার কারণে। এখন মুক্তি নিশ্চিত হওয়ায় চলচ্চিত্রাঙ্গণের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
চলচ্চিত্রটির ট্রেলার শেয়ার করে স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা ইফতেখার আহমদ সায়মন লিখেছেন ‘এক ঝলক দেখে নিন। গোটাটা পরশু থেকে অর্থাৎ ২৭ জানুয়ারি থেকে দেখতে চাইলে চলে যান সুগন্ধা সিনেমা হলে। কে কোন দিন কোন শোতে যেতে আগ্রহী? কমেন্টে জানান। মিনিমাম পাঁচ জনের গ্রুপ হলে একজনকে ফ্রি দেখতে দেয়ার সুবিধাটা সাইফ হাসান ভাই এবারো কি দিবেন? অবিরাম শুভ কামনা রইলো খন্দকার সুমন ভাই। ‘সাঁতাও’ নাগচে বাহে এর জন্য। আশা করছি, চট্টগ্রাম থেকে আপনি ভাল সাপোর্ট পাবেন।’
রংপুর অঞ্চলের গল্প ও আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত এ চলচ্চিত্র নিয়ে রংপুরে ‘গণজোয়ার’ সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে সুমন বলেন, ‘রংপুরে শাপলা সিনেমা হলে টিকিটের প্রিসেল শুরু হয়েছে। নাসরিন আক্তার রানু নামের এক বন্ধু প্রথম শোয়ের ২০০ টিকেট কিনে নিয়েছে। একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা এমন ভালবাসা পেলে তার আর কী লাগে?’
রংপুর ছাড়াও ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের দুইটি হলে মুক্তি পাচ্ছে সাঁতাও। এ বিষয়ে সুমন বলেন, ‘চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে একটা বড় গুণ আছে। তারা যেমন নিজেদের শিকড় ভালবাসে, তেমনি অন্যের শিকড়কেও সম্মান করে।’
উজানের বাঁধে মরুভূমিতে রূপ নেয়া ভাটি অঞ্চলের কৃষকের হাত-পা বাঁধা প্রকৃতি আর এলাকার প্রভাবশালীদের কাছে। সেইসব কৃষকদের যাপিত জীবনের যন্ত্রণা আর সংগ্রাম নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’।
নির্মাতা জানান, টানা কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণকে রংপুর অঞ্চলে বলে ‘সাঁতাও’। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন যাপনের চিত্রায়নের প্রয়াস থেকে তার এ চলচ্চিত্রের কাজে হাত দেয়া।
‘এতে তুলে ধরা হয়েছে প্রকৃতি তথা মাটি, প্রাণী ও মানুষের সম্পর্কের গল্প। আছে মাতৃত্বের সার্বজনীন রূপ ও সুরেলা জনগোষ্ঠীর সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না।’
সুমন বলেন, ‘ওই এলাকায় এমন জনগোষ্ঠী আছেন, তারা গান গেয়ে মাতম করেন, গান গেয়ে আনন্দ করেন। তাদের সুখ দুঃখ সবকিছু প্রকাশ ঘটে সংগীতে। তাদেরই ‘সুরেলা জনগোষ্ঠী’ বা মিউজিক্যাল কমিউনিটি বলা হচ্ছে।’
নেপাল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক প্যানারোমা বিভাগে দুটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে। এ তালিকায় নূর ইমরানের পাতাল ঘরের সাথে আছে ‘সাঁতাও।’