শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

শেরপুরে সাদেক আলী ফাউন্ডেশনের মেধা বৃত্তি এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা

মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ২০, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

শেরপুর: সাদেক আলী ফাউন্ডেশনের মেধা বৃত্তি প্রদান এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান গত ১১ ফেব্রুয়ারি শেরপুর জেলা সদরের চরজংগলদী রাহেতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের অডিটোরিয়মে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাদেক আলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, নিউ ইয়র্ক প্রবাসী লেখক ও সাংবাদিক মো. আবুল কাশেম। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. কামাল হোসেন।

স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ভীমগনজ উঁচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুলাল উদ্দিন মোল্লার সভাপতিত্বে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সাদেক আলী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুল করিম, ফাউন্ডেশনের অর্থ পরিচালক ফেরদৌসী বেগম, প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন, স্কুল পরিচালনা পরিষদের সাবেক সদস্য মুক্তার হোসেন, প্রকৌশলী আমজাদ হোসাইন।

জুনাইদ আহমেদের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে বক্তৃতা করেন সোহাগ মিয়া, স্কুলের মৌলভী শিক্ষক আবদুল জলিল, এসএসসি পরীক্ষাথী মো. শিমুল মিয়া, দশম শ্রেণির ছাত্রী রমিলা খাতুন।

অনুষ্ঠানে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার বাবা সাদেক আলী উচ্চ শিক্ষিত মানুষ ছিলেন না। তবে, তিনি ছিলেন স্বশিক্ষিত। তিনি একজন সমাজ হিতৈষী, পরোপকারী, সংস্কৃতিমনা ও অসম্প্রদায়িক সাদা মনের মানুষ ছিলেন। তিনি সব সময় সমাজের হত দরিদ্র মানুষে ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে ভাবতেন। তার দূরদর্শি ভাবনা-চিন্তাকে সমাজে স্থায়ীভাবে প্রতিফলিত করার জন্যই আমি এ ফাউন্ডেশন গঠন করেছি। এটি একটি অলাভজনক, অরাজনৈতিক ও সেবামূলক ফাউন্ডেশন।’

প্রতি বছর মেধা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করে ছাত্র-ছাত্রীদের সাদেক আলী ফাউন্ডেশনের বৃত্তি লাভের আহবান জানান তিনি।

কামাল হোসেন সাদেক আলী ফাউন্ডেশনের প্রশংসা করে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে সাধুবাদ জানান।

তিনি বলেন, ‘প্রবাসের কষ্টার্জিত অর্থ মানব সেবা, শিক্ষা বৃত্তি ফাউন্ডেশন পরিচালনা করার মানুষ আমাদের সমাজে বড় অভা। প্রবাসে ও আমাদের সমাজে বহু বিত্তবান মানুষ রয়েছে। কিন্তু, তাদের উদার মানসিকতা নেই। আবুল কাশেম তার নিজ এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে মেধা বিকাশের প্রতিযোগিতা বাড়ানোর জন্য যে ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে।’

কামাল হোসেন তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থাপনার উপর পড়াশুনায় ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহী হওয়ার আহবান জানান।

দুলাল উদ্দীন মোল্লা বলেন, ‘সাদেক আলী ফাউন্ডেশন আমাদের স্কুলের অন্যতম সম্পদে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর সাদেক আলী ফাউন্ডেশনের বৃত্তি পাওয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে পড়াশুনার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। তার প্রমাণ মরিয়ম আক্তার ও ফাতেমা আক্তার। ফলাফল সিটে দেখা যায়, তারা প্রতি বছরই ক্লাসের সমাপনী পরীক্ষায় মেধা তালিকার শীর্ষে থাকে। আবুল কাশেম যে উদ্দেশ্য নিয়ে সাদেক আলী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন, তার শত ভাগ সফল হয়েছে। কারণ, আমাদের স্কুলে এ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে পড়াশুনার প্রতি পরস্পর প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

তিনি এ ধরনের শিক্ষা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানান।

২০১৬ সালে সাদেক আলী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। অগ্রণী বাংকে এক লাখ টাকার এফডিআর থেকে প্রতি বছর লভ্যাংশ ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রথম স্থান অধিকারীকে এক কালীন বৃত্তি দেয়া হয়। এবার ১৫ জন ছাত্র-ছাত্রীকে আট হাজার টাকা মেধা বৃত্তি দেয়া হয়। বৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীরা হলেন মো. সোলাইমান, মরিয়ম আক্তার, লিজা আক্তার, ফাতেমা আক্তার, রিফাত মিয়া, ফাতেমা আকতার, সাদিয়া আক্তার, মরিয়ম আক্তার, জেসমিন আকতার ও জাহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে এলাকার বিভিন্ন শেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মরহুম সাদেক আলী ও তার মরহুমা স্ত্রী বেগম চাঁনবানুর আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং এসএসসির বিদায়ী পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন শামীম হোসেন।