বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫

শিরোনাম

সংস্কার নিয়ে কারো উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই: আমীর খসরু

রবিবার, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবর্ষ সমারম্ভ অনুষ্ঠানে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।’

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে সিভাসুর অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিভাসুর উপাচার্য প্রফেসর মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান। সমারম্ভ বক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট বিতাড়িত হওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জনগণের মনোজগতে যে পরিবর্তন এসেছে, তা সবাইকে বুঝতে হবে। যারা বুঝতে পারবে না, সেই রাজনীতিবিদ হোক, শিক্ষক হোক, তার কোন ভবিষ্যৎ নেই। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের চিন্তা, ভাবনা, দর্শন একেবারে বদলে গেছে। যারা সেটা অনুধাবন করতে পারবে না, ধারণ করতে পারবে না এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারবে না, তাদের জন্য আগামীর বাংলাদেশ কঠিন হয়ে যাবে।’

নবাগত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তোমাদেরকে ভাল মানুষ হতে হবে। ভালে মানুষ না হলে শিক্ষার কোন মূল্য নেই। সর্বক্ষেত্রে ভিন্নমতের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি সিভাসুর ট্রেজারার প্রফেসর মো. কামাল, ফুড সায়েন্স ও টেকনোলজি অনুষদের ডিন প্রফেসর ফেরদৌসী আকতার ও ফিশারিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর শেখ আহমাদ-আল-নাহিদ।

সিভাসুর পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর মোহাম্মদ রাশেদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে চারজন নবাগত শিক্ষার্থী তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, ‘মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য যে সুযোগ বাংলাদেশে রয়েছে, তা খুব কম দেশেই আছে। আমরা কিন্তু মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ করিনি। আমরা বিনিয়োগ করেছি পদ্মা ব্রিজে, আমরা বিনিয়োগ করেছি টানেলে। কিন্তু অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমাদের বিনিয়োগ করা দরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। এই দুই খাতে বিনিয়োগ ছাড়া মানবসম্পদ তৈরি করা সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার পরবর্তী বাংলাদেশ কেমন হবে সেটা চিন্তা করে বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব দেড় বছর আগেই দিয়েছিলাম। সব সংস্কারের কথা ওখানে বলা আছে। সুতরাং, সংস্কার নিয়ে কারো উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা জাতীয় সরকার করে ৩১ দফা সংস্কার পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করব।’

মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, ‘বিশ্বমানের পাঠ্যসূচি, অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি ও ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশনের মাধ্যমে সিভাসুর শিক্ষার্থীরা অর্জন করছে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা। ইউরোপ-আমেরিকার আদলে দেশে প্রথম বারের মত এখানে চালু করা হয়েছে ‘প্রবলেম বেইসড লার্নিং’ পদ্ধতি।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেশের মানুষের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ এবং এক স্বাস্থ্য নীতি বাস্তবায়ন তথা মানুষ, পরিবেশ ও প্রাণিসম্পদের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে সিভাসু।’

মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জীবনে কি হতে চাও তা এখনই ঠিক করতে হবে। সেই অনুযায়ী এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। কঠোর পরিশ্রম করতে হবে ও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। তাহলেই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সততা ও নিষ্ঠার সাথে কঠোর পরিশ্রম করলে জীবনে সফলতা আসবেই।’

গুচ্ছ পদ্ধতিতে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি অনুষদে সর্বমোট ২৭০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাদের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।