রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

সাংসদদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে

সোমবার, মে ১৫, ২০২৩

প্রিন্ট করুন
শেখ হাসিনা

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সংসদীয় দলগুলোকে নিয়ে আগামী নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে, যদিও ব্রিটেনের ওয়েস্টমিনস্টারের গণতন্ত্র অনুসরণ করে দেশে আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা ওয়েস্টমিনস্টার ধরনের গণতন্ত্র অনুসরণ করি। ব্রিটেনের মত করে আমরা নির্বাচন আয়োজন করব। হ্যাঁ, আমরা আমাদের উদারতা (নমনীয়তা) দেখাতে পারি যে, সংসদে যেসব দল রয়েছে, তাদের সাংসদদের থেকে মধ্যে কেউ নির্বাচনকালীন সরকারে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করলে, আমরা তাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছি।’

সোমবার (১৫ মে) বিকালে গণভবনে গেল ২৫ এপ্রিল থেকে ৮ মে পর্যন্ত জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ত্রিদেশীয় সফরের ফলাফল সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর আগেও এমন উদারতা দেখিযেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে ওই নির্বাচনকালীন সরকারে তার দলের প্রতিনিধি দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা করেনি। এখনো তারা (বিএনপি) সংসদে নেই। সুতরাং, তাদের নিয়ে ভাববার কিছু নেই।’

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। জনগণ যদি তাকে ভোট দেয়- তবেই তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, অন্যথায় নয়।’

এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যবৃন্দ, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও মোশাররফ হোসেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী আব্দুল মান্নান এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি সরকার পতনের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, সরকার কিছুই করছে না। কিন্তু,আমরা যখনই বিরোধী দলে ছিলাম, তারা কি আমাদের রাস্তায় নামতে দিয়েছিল। গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে তারা আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। বিএনপির আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের কোন আপত্তি নেই। তবে, কোন অগ্নি সন্ত্রাস সহ্য করা হবে না।’

তিনি বলেন, ‘তারা আন্দোলন করলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু, তারা যদি অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা ও ফের কাউকে পুড়িয়ে মারার পথ অবলম্বন করে, আমরা তাদের রেহাই দেব না। তারা যতটা পারে, তত আন্দোলন করতে পারে।’

এ প্রসঙ্গে, প্রধানমন্ত্রী অতীতে বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করেন, যখন তারা ৫০০টিরও বেশি স্কুল, তিন হাজার ৮০০টি যানবাহন, লঞ্চ, ৭০টি ট্রেন ও সাড় তিন হাজার মানুষকে পুড়িয়ে দিয়েছিল।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাসে যারা দগ্ধ হয়েছেন, তাদের তথ্য কি কেউ রাখে?’

তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি যে, তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারে। কিন্তু, মানুষকে জ্বালানোর কোনো কারণ নেই। ‘আমরা কাউকে মানুষের ক্ষতি করতে দেব না।’

বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্দোলন করে কারা সুবিধা পাচ্ছেন তিনি জানেন।

তিনি আরো বলেন, ‘তারা যত খুশী আন্দোলন করতে পারে। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। কারণ, আমি জনগণের সাথে আছি। আমি জনগণের জন্য কাজ করছি এবং জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসই আমার বড় শক্তি।’

তার হারানোর কিছু নেই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আমার মা-বাবা-ভাইকে হারিয়েছি। আমি এখন আমার জনগণের জন্য কাজ করছি।’

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী উল্লেখ করেন, তার দল প্রচুর কাজ করে এবং সে কারণেই স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী আওয়ামী লীগের শত্রু হয়ে উঠেছে। এটি স্বাভাবিক। তবে, আমি এতে বিরক্ত নই। কারণ, আমি দেশের জন্য কাজ করছি ও চাই মানুষ ভাল থাকুক।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার সাফল্য হল তিনি দেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে পেরেছেন। কিন্তু, যারা দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে, তাদের এটা পছন্দ হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি আমার লক্ষ্য পূরণ করেছি এবং বাকিটাও অর্জিত হবে, ইনশাআল্লাহ।’

তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন করব এবং এর কারণ, আমি করোনা ভাইরাসের কারণে ২০২৪ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন করতে পারিনি এবং সেই কারণেই আমার ইচ্ছা ২০২৬ সালের মধ্যে এটি করতে চাই।’

যারা (বিএনপি) এখন সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন করছে, তাদের সাথে কোন আলোচনা হবে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের কী জন্য আলোচনায় ডাকব? তাদের দাবি সুস্পষ্ট নয়।’

ডলার সঙ্কট প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডলারের সঙ্কট বিশ্বব্যাপী, কেবল বাংলাদেশে নয়।’

তিনি বলেন, ‘(বাংলাদেশে) এ ধরনের কোন সঙ্কট নেই। বিএনপি শাসনামলে ২০০৬ সালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ০.৭৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মানে এক বিলিয়ন ডলারেরও কম। কিন্তু, এখন আমাদের কাছে ৩১ দশমিক ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রিজার্ভ রয়েছে। সুতরাং, এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার খুব বেশি কারণ নেই।’

অন্যান্য প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইএমএফ বাংলাদেশকে ঋণ দিয়েছে। কারণ, বাংলাদেশের তা পরিশোধ করার সক্ষমতা রয়েছে ও দেশের অর্থনীতি এখনো দুর্বল হয়নি।’

যারা সরকারের কোন ভাল দিক দেখেন না, সেই গোষ্ঠীর কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা চোখ থাকা সত্ত্বেও অন্ধ।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ থেকে মাত্র পাঁচ শতাংশে নেমে এসেছে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, তারা তার দলের আগামী নির্বাচনী ইশতেহারে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর সম্ভাবনা নাকচ করে দেন।