ঢাকা: দেশের সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় এ নির্দেশ দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এ বৈঠক। পরে বিকালে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রিসভার বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তায় আরো জোর দিতে বলা হয়েছে। জাতীয় তথ্যভান্ডারের নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এছাড়া পরবর্তী সাবমেরিন ক্যাবলের জন্য যে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, সেটির কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
আনোয়ারুল ইসরাম আরো বলেন, ‘আর যে সব স্থানে গ্যাস ও তেল পাইপলাইনে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করে সরবরাহ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে, যাতে পরিবহন খরচ না লাগে এবং তাড়াতাড়ি গ্যাস ও তেল সরবরাহ করা যায়।’
এখন সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেন জোরদার করতে বলা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গত দুই তিন বছর ধরেই এ বিষয়টি দেখা হচ্ছে। এখন বিষয়টির ওপর আরো জোর দেয়া ও আধুনিক উপকরণ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘কোনভাবেই যাতে ওয়েবসাইট বা অন্য কোন বিষয় হ্যাক না করা যায়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ধীরে ধীরে ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যাওয়া হচ্ছে। এগুলোতে যেন ভাল রকমের নিরাপত্তা থাকে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বৈঠকে সরকারী চাকুরী (সংশোধন), আইনের খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটি জাতীয় সংসদে পাস হলে সরকারী প্রতিষ্ঠানের মত স্বায়ত্বশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিষয়েও অর্থ বিভাগের সম্মতি লাগবে।’
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে সরকারী চাকুরী আইন পাস করা হয়। কিন্তু তাতে একটি বিষয় অস্পষ্ট ছিল। সেটি হল সরকারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিষয়ের কর্তৃপক্ষ ছিল অর্থ বিভাগ। কিন্তু স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান বা লেজিসলেটিভ সংস্থা, যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিষয়টি পরিষ্কার ছিল না। এ জন্য অর্থ বিভাগ থেকে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছিল।’
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান বা লেজিসলেটিভ সংস্থার আর্থিক বিষয়েও অর্থ বিভাগের একটি কর্তৃত্ব থাকবে। কোন প্রতিষ্ঠান নিজের মত করে বেতন ভাতা ঠিক করে নিলে তা হবে না। অর্থাৎ, যে কোন অর্থনৈতিক বিষয়ে অর্থ বিভাগের ছাড় নিতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এর মধ্যে পড়বে। এগুলো আগেও ছিল। কিন্তু এ আইন হওয়ার পর বিষয়টি অস্পষ্ট ছিল।’
এছাড়াও আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে দ্বৈত কর পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাবসহ আরো বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আগামী বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সরকারী চাকুরী থেকে অবসর উত্তর ছুটিতে যাবেন। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) ছিল তার মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেষ অংশগ্রহণ। ইতিমধ্যে নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার।