সিলেট: সিলেট গ্যাসক্ষেত্রের দশ নম্বর অনুসন্ধান কূপ খনন করে প্রথম স্তরে জ্বালানি তেলের সন্ধান মিলেছে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫ ব্যারেল তেলের প্রবাহ পাওয়া গেছে। এছাড়া, ওই কূপের তিনটি স্তরে নতুন গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। সচিবালয়ে রোববার (১০ ডিসেম্বর) জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘সিলেট-দশ কূপ (জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাট) এলাকায় আমরা দুই মাস পূর্বে ড্রিল শুরু করি। এ ড্রিল করে আমরা তিনটি স্তরে গ্যাসের সন্ধান পাই। বড় সুখবর হল, প্রথম স্তরে আমরা তেলের সন্ধান পেয়েছি।’
তিনি জানান, শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) পরীক্ষা করে জ্বালানি তেলের উপস্থিতির কথা জানা যায়।
প্রথম দিন দুই ঘণ্টায় ৭০ ব্যারেলের মত জ্বালানি তেল উত্তোলন করা হয়েছে উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, ‘তেল উত্তোলন আমরা আপাতত বন্ধ রেখেছি। এটা আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। মোট মজুদের পরিমাণটা আমরা জানতে পারব। পুরো বিষয়টির বিস্তারিত জানতে আরো চার-পাঁচ মাস সময় লাগবে।’
আগামী ২০ বছর এ গ্যাসক্ষেত্র থেকে সুফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন প্রতিমন্ত্রী। সিলেটের খনি থেকে উত্তোলিত জ্বালানি তেল এরই মধ্যে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিলেট দশ নম্বর কূপ দুই হাজার ৫৭৬ মিটার গভীরতায় খনন করা হয়। কূপের নিচের স্তরটি দুই হাজার ৫৪০ থেকে দুই হাজার ৫৫০ মিটার টেস্ট করে আড়াই কোটি ঘনফুট গ্যাসের প্রবাহ পাওয়া যায়। ফ্লোয়িং প্রেশার তিন হাজার ২৫০ পিএসআই। মজুদের পরিমাণ ৪৩ থেকে ১০০ বিলিয়ন ঘনফুট। দুই হাজার ৪৬০ থেকে দুই হাজার ৪৭৫ মিটারে আরো একটি ভাল গ্যাসের স্তর পাওয়া যায়। এখানে টেস্ট করলে আড়াই-তিন কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। এছাড়া, দুই হাজার ২৯০ থেকে দুই হাজার ৩১০ মিটারে গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস ক্ষেত্রটিতে জ্বালানি তেলের মজুদ প্রায় ৮-১০ মিলিয়ন ব্যারেল।
নসরুল হামিদ জানান, প্রাকৃতিক গ্যাস ও জ্বালানি তেল অনুসন্ধানকাজ অব্যাহত থাকবে। মাল্টিক্লাইন সার্ভের প্রাথমিক ডাটা পাওয়া গেছে। কিছু দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিডিং রাউন্ডে যাবে। ৪৬টি কূপে অনুসন্ধান করা হবে, যা থেকে ৬১৮ এমএমসিএফডি গ্যাস পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে।
বলে রাখা ভাল, এর আগে ১৯৮৬ সালে হরিপুরে জ্বালানি তেলের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল। সেটার স্থায়িত্ব ছিল পাঁচ বছর।