সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম: অসুস্থ শরীর নিয়ে সেবা পেতে মানুষের মত নিজেই হাসপাতালে হাজির হয়েছে এক বানর। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল পাঁচটার দিকে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত হয়ে বন্য প্রাণী বানরকে চিকিৎসা সেবা নিতে দেখে অনেকে অবাক হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শরীরে ক্ষত নিয়ে দুই দফায় প্রাণীটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে চিকিৎসকরা তাকে পরম যত্নে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছু দিন আগে সীতাকুণ্ডে বন থেকে একটি বানর লোকালয়ে চলে আসে। প্রায় এক মাস ধরে বানরটি বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছিল। গেল দুই দিন ধরে বানরটি সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এসে বসে থাকে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নুর উদ্দিন রাশেদ জানান, এক মাস আগে বানরটি হাসপাতালের পাশে দৌড়াদৌড়ি করছিল। এরপর আর দেখিনি। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে ডিউটি শেষ করে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বারান্দায় বানরটি বসে থাকতে দেখি। দেখা যায়, তার শরীরে ক্ষত রয়েছে। তখন সাথে সাথে ক্ষত স্থানে ড্রেসিং করে দিলে সেটি চলে যায়। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে ডিউটি শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ফের বারান্দায় প্রাণীটিকে বসে থাকতে দেখি। পরে, বানরটির ক্ষত স্থানে ব্যান্ডেজ করে ছেড়ে দিই।
তিনি আরো বলেন, ‘যন্ত্রণায় কাতর বানরটির শরীরের পেছনের অংশের ক্ষতে পচন ধরছে। কোথাও বৈদ্যুতিক শকে প্রাণীটির এমন অবস্থা হয়েছে বলে ধারণা করছি। আমি আসার পর হাসপাতালে খবর নিয়েছি, বানরটি গাছে বসে রয়েছে।’
অসুস্থ বানরের চিকিৎসায় এগিয়ে আসেননি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের পশুচিকিৎসকরা। তারা বলেছে, ‘এটি বনবিভাগের দায়িত্ব।
বন বিভাগ বলছে, ‘যেহেতু বানর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। সেহেতু পশুচিকিৎসকরা বানরটির চিকিৎসা দিতে পারেন।’
সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহমিনা আরজু বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বলা হয়েছে, অসুস্থ বানরের প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে। দেখি, আমরা গিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে পুরোপুরি সুস্থ হতে চিকিৎসা দেয়া হবে।’
উপকূলীয় বন বিভাগের সীতাকুণ্ড রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, ‘অসুস্থ প্রাণীর চিকিৎসার বিষয়টি দেখবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়। কিন্তু, তারা কোন দায় নিচ্ছে না। প্রাণীটি নিজে থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে।’