ঢাকা: খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ সোমবার (২৫ ডিসেম্বর)। এই ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট ২৫ ডিসেম্বর বেথলেহেমে জন্ম নেন। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা এ দিনটিকে ‘শুভ বড়দিন’ হিসেবে উদযাপন করে থাকেন।
খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টি-কর্তার মহিমা প্রচারের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতেই প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশের খ্রিস্টান ধর্মানুসারীরাও এ দিন যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্য্য ও আচারাদি, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্যদিয়ে ‘শুভ বড়দিন’ উদযাপন করবেন।
এ উপলক্ষে ঢাকাসহ গোটা দেশে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গির্জাগুলোকে সাজানো হয়েছে নতুন-আঙ্গিকে। এছাড়াও, রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন গির্জা ও তারকা-হেটেলগুলোতে ব্যবস্থা করা হয়েছে আলোক সজ্জার।
এ দিকে বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিস্টধর্মাবলম্বীসহ সবার শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে পৃথক বাণী দিয়েছেন ।
বাণীতে সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘ধর্মের মূল কথাই হচ্ছে মানুষ হিসেবে মানুষের সেবা করা। সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। তাই, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।’
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, ‘পৃথিবীব্যাপী খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা মহামতি যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিনকে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদ্যাপন করে থাকেন। খ্রিষ্ট ধর্মানুসারে যিশু খ্রিষ্ট ছিলেন সত্যান্বেষী, মানবজাতির মুক্তির দূত ও আলোর দিশারী।’
অন্য দিকে, বাণীতে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সব শ্রেণি-পেশার জনগণের উন্নয়নই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব সম্প্রদায়ের মানুষের মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।’
বড়দিন উপলক্ষে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সরকারি ছুটি। অপর দিকে, দিনটি উপলক্ষে বহু খ্রিষ্টান পরিবারে কেক তৈরি করা হবে, থাকবে বিশেষ খাদ্যের আয়োজন। এছাড়াও, দেশের অনেক অঞ্চলে আয়োজন করা হয়েছে কীর্তনের পাশাপাশি ধর্মীয় গানের।
খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বড়দিনকে বেছে নেন। পরিবারের সদস্যদের সাথে আনন্দ ভাগ করে নিতে অনেকেই ঢাকা ছেড়ে গিয়েছেন গ্রামের বাড়িতে।
ঢাকার তারকা হোটেলগুলোতে আলোক সজ্জার পাশাপাশি হোটেলের ভিতরে কৃত্রিমভাবে স্থাপন করা হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি ও শান্তাক্লজ। বড়দিনের প্রাক্কালে রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে বিভিন্ন গির্জায় বিশেষ প্রার্থনাও অনুষ্ঠিত হবে। আর সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শুরু হবে বড়দিনের প্রার্থনা।