ঢাকা: ‘স্বাধীন চলচ্চিত্র আন্দোলনের ইশতেহার’ বইটি ছোট্ট কলেবরের হলেও এটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রক্রিয়ার কথা বলে। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কাঁটাবনের পাঠক সমাবেশে ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি’র নিয়মিত চলচ্চিত্র কর্মসূচি ‘চলচ্চিত্রের বাহাস পর্ব’ এর ৩৬তম বৈঠক অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
চলচ্চিত্রের বাহাস পর্বের আয়োজনে বেলায়াত হোসেন মামুনের চলচ্চিত্রগ্রন্থ ‘স্বাধীন চলচ্চিত্র আন্দোলনের ইশতেহার’ নিয়ে পাঠ-পর্যালোচনার আলোকে আলোচনার শিরোনাম ছিল ‘চলচ্চিত্রের মুক্তির যুদ্ধ ও বাংলাদেশের স্বাধীন চলচ্চিত্র’। চলচ্চিত্র নির্মাতা ও স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর, সাংবাদিক ফিরোজ আহমেদ ও চলচ্চিত্র নির্মাতা শবনম ফেরদৌসী গ্রন্থটি নিয়ে আলোচনা করেন। ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অদ্রি হৃদয়েশের সঞ্চালনায় সংগঠনের সভাপতি বেলায়াত হোসেন মামুন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘বেলায়াত হোসেন মামুন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের বন্দিত্বের যে চিত্র তুলে ধরেছেন, সেখানে ব্রিটিশ, পাকিস্তানি সময়ের কথা, বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ; সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলের কথাও যেভাবে তুলে এনছেন, তেমনি ১৯৭২-১৯৭৫ এর সময়টাকেও তুলে এনছেন বইটিতে।’
নির্মাতা শবনম ফেরদৌসী জানান, চলচ্চিত্রের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। কিন্তু যিনি চলচ্চিত্রটি বানাচ্ছেন তিনি আসলে কতটুকু মুক্ত? একটা সময় ছিল- যখন নির্মাতা মোটামুটি জীবন বাজি রেখে সৎভাবে ছবিটা বানানোর, ছবি বানানোটা একটা যুদ্ধের মত চর্চা ছিল। কিন্তু এখন এ চর্চাটা নেই। সত্তর ও আশির দশকের দিকেও নির্মাতা তার চিন্তনের জায়গাতে জানা ছিলেন, যা এখন অনুপস্থিত। এখন একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা কোন ক্ষেত্রেই স্বাধীন নন, মুক্তও নন।
এনামুল করিম নির্ঝর বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে ‘স্বাধীনতা’ এ শব্দটা কতটুকু সমৃদ্ধ হল- সেটাই সামগ্রিক অর্থে বড় বিষয়। যদি বলি স্বাধীনতা আমরা পেলাম তারপরে আজ দেখছি শুধুমাত্র মুক্তভাবে কথা বলাটাই সবকিছু। আমাদের নিজেদের অস্তিত্বের জায়গাতে নিজেদের সত্য, আদর্শচর্চার ক্ষেত্রে কতটুকু সমৃদ্ধ হয়েছি, কিংবা কতটুকু উন্মুক্ত হলাম। মুক্তভাবে চিন্তা করতে পারাটাও খুব জরুরি বিষয়। ওই জায়গাগুলোতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’
উল্লেখ্য, ‘স্বাধীন চলচ্চিত্র আন্দোলনের ইশতেহার’ বইটি ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয়।