চট্টগ্রাম: প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রাক্তন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৬০০জনকে অজ্ঞাত আসামি করে চট্টগ্রামে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা হয়েছে। সিটির সদরঘাট থানায় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মোমেন হোসেন জয় বাদি হয়ে অজ্ঞাতসহ মোট ৮৬৫ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন। তিনি চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রমিজ আহমদ বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গতকাল সোমবার (৪ নভেম্বর) রাতে মামলাটি থানায় এন্ট্রি করা হয়েছে। মামলায় প্রাক্তন তিন মন্ত্রীসহ একাধিক প্রাক্তন সাংসদকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মামলার উল্লেখযোগ্য বাকি আসামিদের মধ্যে প্রাক্তন হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রাক্তন সাংসদ মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির উদ্দিন, প্রাক্তন সাংসদ ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রাক্তন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রাক্তন সাংসদ আব্দুস ছালাম, কুমিল্লার সিটির প্রাক্তন মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা, প্রাক্তন সাংসদ মুজিবুর রহমান, মহিউদ্দিন বাচ্চু ও আবু রেজা নদভী ও তার স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরী, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরসহ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা, মহানগর, বিভিন্ন উপজেলার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রয়েছে।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গেল ৪ আগস্ট সকাল ১১টা থেকে ৫ আগস্ট রাত দশটা পর্যন্ত তিনি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছিলেন। সে-সময় আসামিরা সিটির সিটি কলেজের সামনে থেকে ইসলামিয়া কলেজ মোড়সহ আশপাশের অলি-গলি থেকে তাদের হাতে থাকা বাঁশের লাঠি, কাঠের লাঠি, ইট-পাথর, লোহার রড ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ সজ্জিত হয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এ সময় আসামিদের হাতে থাকা, অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, হকস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি বেধড়ক মারধর করা শুরু করে এবং গুলি বর্ষণ, ককটেল ও বিভিন্ন বিস্ফোরক দ্রব্য দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়।
এছাড়া, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নারী শিক্ষার্থীদের মারধর করে অশ্লীল গালিগালাজ করে এবং অসহায় অবস্থায় পেয়ে দৃষ্টিকটু অশ্লীল ইঙ্গিত করে। উপস্থিত জনতার সামনে নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্থা করে এবং গণধর্ষণের হুমকি দেয়। আসামিরা ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা দোকানদার-কর্মচারীদের ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাসহ শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতা ও সাধারণ জনমানুষের মনে ভীতি সঞ্চারের জন্য সড়কের ওপর থাকা বাস, সিএনজি ও মোটরসাইকেল, ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে আনুমানিক দশ কোটি টাকার বেশি ক্ষতিসাধন করে।