ঢাকা: জুন ও জুলাইয়ে ভারত ও চীনে দ্বিপক্ষীয় সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন জয়ের পর তার এ দুই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এশিয়ার প্রধান দুই অর্থনৈতিক শক্তি ভারত ও চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো গভীর করা এ সফর দুইটির লক্ষ্য।
বাংলাদেশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী ২১ ও ২২ জুন সরকারি সফর হিসেবে নয়া দিল্লি যাবেন ও তিনি ৯-১২ জুলাই বেইজিং সফর করবেন।’
নয়া সরকার গঠনের পর ফেব্রুয়ারিতে জার্মানিতে বহুপক্ষীয় সফরে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেন শেখ হাসিনা।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে জাতীয় নির্বাচন শেষ হওয়ার পরই সেখানে সফরে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। দেশটির জাতীয় নির্বাচন পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক অনুশীলন। যা ১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন পর্যন্ত ৭ ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে ও ভোট গণনা ৪ জুন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার নয়া দিল্লি সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরো উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
জানুয়ারিতে নির্বাচনে জয়ের জন্য শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছিলেন এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অব্যাহত জোরদার করার আশা প্রকাশ করেছিলেন মোদী।
মোদি ও শেখ হাসিনার মধ্যে সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের সময় হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশ অতিথি দেশ ছিল।
মোদি আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারে তার শপথ অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়া ও বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের আমন্ত্রণ জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া, জুলাইয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফরের ব্যাপারটি তুলে ধরা হয়। তখন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে চীনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশের ‘রূপকল্প ২০৪১’ ও ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের আকাঙ্ক্ষার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্প্রসারণে এ সফরের তাৎপর্যের ওপর জোর দেন।
রোববার (২ জুন) রাতে এক সেমিনারে শেখ হাসিনার আসন্ন সফর নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, ‘যা হবে আরেকটি ঐতিহাসিক ঘটনা ও গেম-চেঞ্জার। এর মাধ্যমে নয়া অধ্যায়ের সূচনা হবে।’
একজন সাংবাদিক আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত সফরের তারিখ জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আসুন, অপেক্ষা করি, জানা যাবে।’
সম্প্রতি ইয়াও বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও চীনের উচিৎ সহযোগিতার জন্য তাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরো জোরদার করা ও নয়া প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্র অনুসন্ধান করা।’
তিনি বলেন, ‘গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ এবং গ্লোবাল সিভিলাইজেশন ইনিশিয়েটিভের আওতায় সহযোগিতার সুযোগগুলো অনুসন্ধান অব্যাহত রাখতে চীন বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে আগ্রহী।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বিশেষ করে তারা বাংলাদেশে শিল্পের মানোন্নয়ন ও ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করতে আগ্রহী।’