লাইফস্টাইল প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে রন্ধনশিল্পের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হোক তা প্লেট-ভর্তি পান্তা-ভাত, ভর্তা; কিংবা খুদের ভাত, চালের রুটি, মাংসের লাল-লাল তরকারি, মাছের ঝোল, লাউ-চিংড়ি কিংবা হরেক রকমের ভাজি অথবা পিঠাপুলি- খাবার নিয়ে উত্তেজনা অব্যাহত থাকে সবার মাঝে, সব সময়ই। তাছাড়া, যে কোন সামাজিক অনুষ্ঠান অথবা বিশেষ উদযাপনেও মূল আকর্ষণে থাকে নানা ধরনের মুখরোচক খাবার।
খাবারের প্রতি উৎসাহ ধরে রাখার জন্য দরকার সুস্বাদ। তাই, খাবারের টাটকা স্বাদ বজায় রাখতে খাবার সংরক্ষণের প্রতি মনোযোগ দেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, কোরবানি ঈদের পর মাংস সংরক্ষণ হয়ে উঠতে পারে বেশ চ্যালেঞ্জিং। খাবার সতেজ রাখার জন্য খাবার সংরক্ষণ করবেন, আসুন আলোচনা করা যাক তা নিয়ে।
আলাদা পাত্রে সংরক্ষণ করুন: পরিষ্কার ফুড-গ্রেড পাত্রে খাবার সংরক্ষণ করতে হবে। পাত্রটি পুনরায় ব্যবহারযোগ্য হলে সেটা ফের কাজে লাগানোর আগে ভালভাবে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হয়। মাথায় রাখতে হবে যে, রিইউজেবল কনটেইনার না হলে তা দ্বিতীয় বার ব্যবহার না করাই ভাল। রেফ্রিজারেটরের আইটেমগুলিকে সহজেই আলাদা করে রাখার সেরা উপায় হল- ট্রে বা পাত্রে খাবারের লেবেল বা ট্যাগ ব্যবহার করা। এছাড়াও, কাঁচা মাংস বা মাছের গন্ধ অন্য খাবারে ছড়িয়ে পড়া থেকে বাঁচাতে এয়ার-টাইট কনটেইনার অথবা ফ্রিজার ব্যাগ হতে পারে খুবই উপযোগী।
ক্রস-কন্ট্যামিনেশন প্রতিরোধে খাবার ঢেকে রাখুন: ঈদুল আজহার পর দেশের বেশিরভাগ ফ্রিজে এখন কাঁচা মাংসের বক্স অথবা প্যাকেট। মাংসের সতেজতা ধরে রাখতে অনেকেই রান্নার আগে ফ্রিজার থেকে মাংস বের করে নরমাল ফ্রিজে রাখেন। এতে করে মাংস থেকে রক্ত ঝরে পড়ে রান্না করা খাবারকে দূষিত করতে পারে। যার ফলে, তাতে ব্যাকটেরিয়া বিপজ্জনক মাত্রায় বেড়ে যেতে পারে, যা হয়ে উঠতে পারে স্বাস্থের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই, কাঁচা খাবার ফ্রিজের নিচের দিকে সিল করা বা ঢাকা পাত্রে, রান্না খাবার থেকে আলাদাভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
শেলফ-লাইফ বাড়াতে হলে হতে হবে স্মার্ট: শুধুমাত্র টিপস মেনে চলাই যথেষ্ট নয়- খাবার সতেজ ও নিরাপদ রাখতে সঠিক রেফ্রিজারেটরের ব্যবহারটাও সমানভাবে জরুরি। আপনার বাড়ির জন্য রেফ্রিজারেটর কেনার সময় মাথায় রাখতে হবে যে, তাতে কার্যকর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও স্টোরেজ সিস্টেম আছে কি না। পচনশীল পণ্যের মেয়াদ বাড়ানোর চাবিকাঠি হল সঠিক আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিশ্চিত করা, যাতে ফ্রিজের আদ্রতা ফ্রিজার বা ডিপ ফ্রিজের আদ্রতা থেকে ভিন্ন হয়। আর সেটা নিশ্চিত করতে স্যামসাং এনেছে ‘টুইন কুলিং প্লাস’ প্রযুক্তি, যা দুটি আলাদা ইভাপোরেটরের মাধ্যমে তাপমাত্রার ওঠানামা কমাতে ফ্রিজ ও ফ্রিজারের ক্ষেত্রে আলাদাভাবে কাজ করে। এতে করে সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ফ্রিজ ও ফ্রিজারের আর্দ্রতা থাকে আলাদা। একইসাথে, এ উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ফ্রিজার ও ফ্রিজের কম্পার্টমেন্টগুলিকে আলাদাভাবে শীতল করে। ফলে, একসাথে সবজি ও মাংসের গন্ধ একসাথে মিশবে না!
সঠিকভাবে খাবার সংরক্ষণ করে খাবারের শেলফ লাইফও বাড়ানো যায়। যেমন- গরু, খাসি অথবা ভেড়ার মাংসে একটু লবণ, মসলা ও সিরকা দিয়ে মিশিয়ে রাখলে সহজেই এ খাবারগুলো অনেক দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা সম্ভব।
সুস্বাস্থ্যের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তা করার প্রধান একটি ধাপ হল- খাবারগুলোকে সঠিক ও নিরাপদভাবে সংরক্ষণ করা। উৎসবে পার্বণে খাবারের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল একটি জাতি হিসাবে সঠিকভাবে খাবার সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাটাও এখানে অপরিসীম।