নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আবু জাফর মাহমুদ নাইট অফ সেন্ট জন অফ জেরুজালেম উপাধি পেয়েছে। শনিবার (২৯ জুলাই) ভিয়েতনামের ভাং তাও শহরের ইমপেরিয়াল হোটেলে অনুষ্ঠানে ১০৯৯ সাল থেকে ঐতিহ্যবাহী আনুষ্ঠানিকতায় তাকে ওই উপাধি দেয়া হয়। গ্লোবাল কনসরটিয়াম অফ সাইন্স এ- টেকনোলজির চেয়ারম্যান গ্রান্ড চ্যাঞ্চেলর লক্ষণ মাদুরাসিংহে তাকে নাইট উপাধির শপথবাক্য পড়ান।
এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর স্যার সুগাথ কটিঙ্কাডুয়া, স্যার মাড্ডুমাগে রোশান এস পেরেরা, ডেম নালানি গুনথুঙ্গা, ডেম রেনুকা গুনথুঙ্গা, নাইট কমান্ডার এশিয়া প্যাসিফিক স্যার ক্লারেন্স কুমারাগে, প্রফেসর স্যার ডেম আসপাসিয়া পেপা, প্রফেসর ডেম হেদার ওয়ারডেল জনসন, স্যার রামানুজন মারথি, প্রফেসর স্যার প্রেমপাল সিংহ, প্রফেসর স্যার ইরানথা ডে মেল, প্রফেসর স্যার এডভিন দেরভিসভিক, প্রফেসর স্যারি রোনাল্ড ইয়াকোবয়, ডেম শিরু উইজেমান্না, ডেম উয়ালাসকি উইজেকুন।
আবু জাফর মাহমুদ ছোটবেলা থেকে মানব সেবায় অবদান রেখে আসছেন। তিনি বঙ্গোপসাগর পাড়ের দ্বীপ জনপদ সন্দ্বীপের সন্তান। প্রাকৃতিক দূর্যোগে বিপন্ন মানুষের পাশেই কেটেছে তার বাল্য ও কৈশোর সময়। তারুণ্যে স্কুল ও কলেজ পড়ার সময়ে প্রগতিশীল ও দেশপ্রেমের রাজনীতিতে নিজেকে নিয়োজিত করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অবদান ছিল অসামান্য। তিনি মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন।
গেল ৩০ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন আবু জাফর মাহমুদ। যুক্তরাষ্ট্রের মানব সেবা ও রাজনীতিতে তিনি রেখে চলেছেন অবদান। নিউইয়র্কের বাঙালি সমাজে তিনিই প্রথম ‘হোম কেয়ার’ চালু করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সেবামূলক কার্যক্রমকে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে ভূমিকা রাখেন। তার হাত ধরেই নিউইয়র্কে হোম কেয়ার সেবার প্রসার ঘটেছে। এখানে বয়স্ক বাবা মায়েদের সেবা যেমন নিশ্চিত হয়েছে, একইভাবে তৈরি হয়েছে বহু সংখ্যক হোম কেয়ার উদ্যোক্তা ও কর্মীবাহিনী। বহু মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে এই খাতে।
বলে রাখা ভাল, দ্য অর্ডার অফ নাইটস অফ দ্য হসপিটাল অফ সেন্ট জন অফ জেরুজালেম সাধারণত নাইটস হসপিটালার নামে পরিচিত। এটি একটি সামরিক আদেশ হিসেবে ১২ শতকে জেরুজালেম রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১২৯১ সাল পর্যন্ত সেখানে সদর দফতর ছিল, তারপরে সাইপ্রাসের কোলোসি ক্যাসেল, রোডস দ্বীপ, মাল্টা ও সেন্ট পিটার্সবার্গে স্থানান্তরিত হয়। প্রধানত দাতব্য ও মানবসেবাকে শক্তিশালী করতেই এ হসপিটালাররা ভূমিকা রাখেন। অসুস্থ, দরিদ্র বা আহত তীর্থযাত্রীদের যত্ন নেয়ার জন্য জেরুজালেমে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। একই সাথে মানব সেবা তথা স্বাস্থ্য সেবায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘নাইটস অফ সেন্ট জন অফ জেরুজালেম’ উপাধি দেয়া হয়। প্রায় হাজার বছরের ইতিহাসে পৃথিবীর বহু মানুষ এই সম্মান পেয়েছেন।