কুলাউড়া, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার জঙ্গিদের একটি আস্তনায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ‘অপারেশন হিলসাইড’ অভিযান চালিয়েছে। এতে চারজন পুরুষ জঙ্গি ও ছয়জন নারী জঙ্গিকে আটক করা হয়।
উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পূর্ব টাট্রিউলী গ্রামে অভিযানের আগে বাড়িটি শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাত থেকে ঘিরে রাখে পুলিশ ও কাউন্টার টেরিজম ইউনিট। অভিযানে কোন হতাহতের ঘটনা ছাড়াই চারজন পুরুষ জঙ্গি ও ছয়জন নারী জঙ্গিকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের সঙ্গীয় তিন শিশুকে হেফাজতে নেয়া হয়। অভিযানে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সার্বিক সহায়তা করে।
জঙ্গি আস্তানা থেকে আড়াই কেজি বিস্ফোরক, ৫০টি ডেটোনেটর, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, কমান্ডো বুটসহ অন্যান্য প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি, ছুরি-রামদাসহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র এবং নগদ তিন লক্ষ ৬১ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্র জানায়, প্রায় এক একর জমি দুবাই প্রবাসী রফিক মিয়ার কাছ থেকে জঙ্গিরা কিনে। এরপর ওই পাহাড়ি টিলার জমিতে কয়েকটি ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছিল। ওই টিলায় প্রায় ২০-২৫ জন বসবাস করত। অভিযানের খবর পেয়ে বেশ কয়েকজন পালিয়ে যায়। ঢাকা থেকে কাউন্টার টেরিজম ইউনিটের একটি ইউনিট সকাল থেকে অভিযান শুরু করেছে।
কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ জানান, এরা জমি কিনে পাহাড়ি টিলায় ঘর তৈরি করে বসবাস করছে। তারা স্থানীয়দের জানান, নদী ভাঙ্গনে তাদের বাড়ি বিলীন হওয়ায় এলাকায় জমি কিনে বসবাস করে আসছেন। তাদের প্রায় সময় সীমান্ত এলাকায় গহীন পাহাড়ে যাতায়াত ছিল।
দূর্গম পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, সিটিটিসি নেতৃত্বে সিটিআই বিভাগের একটি টিম সোয়াত অপারেশন ‘অপারেশন হিল সাইড’ চালায়। রাতভর অভিযান শেষে আজ শনিবার (১২ আগস্ট) সকাল পৌনে ১১টার দিকে ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
ব্রিফিংয়ে সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘আটক ব্যক্তিরা ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’ নামের নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনের সদস্য।’
অভিযানে আটকৃতরা হল সাতক্ষীরা জেলার দক্ষিণ নলতা গ্রামের শরীফুল ইসলাম (৪০), আমিনা বেগম (৪০), মোছা. হাবিবা বিনতে শফিকুল (২০), কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার কানলার হাফিজ উল্লাহ (২৫), নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার রসুলপুর গ্রামের খায়রুল ইসলাম (২২), সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর থানার মাইজবাড়ী গ্রামের রাফিউল ইসলাম (২২), মেঘনা (১৭), আবিদা (১২ মাস), পাবনা জেলার আটঘরিয়া থানার শ্রীপুর গ্রামের শাপলা বেগম (২২), জুবেদা (১৮ মাস), হুজাইফা (৬), নাটোর জেলার চাদপুর গ্রামের মাইশা ইসলাম (২০), বগুড়া জেলার শরিয়াকান্দি থানার নিজবলাই গ্রামের মোছা. সানজিদা খাতুন।