নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বনভোজন উৎসব করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘সাস্ট এলামনাই এসোসিয়েশন।’ রোববার (১৩ আগস্ট) ‘সাস্টিয়ানদের এই মিলন, দূরপ্রবাসে হৃদস্পন্দন’ এই স্লোগানে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের এ আয়োজন।
লংআইল্যান্ডের বেথপেজ স্টেট পার্কে আয়োজিত বনভোজনে নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, ভার্জিনিয়ায় বিভিন্ন পেশায় কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা ও তাদের পরিবার পরিজনসহ প্রায় দেড় শতাধিক সদস্য অংশ নেন। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সময়ের স্মৃতিচারণসহ সহপাঠী, সিনিয়র-জুনিয়র ও অতিথিদের আলাপচারিতায় মুখর হয়ে উঠে পুরো অনুষ্ঠান।
সকাল ১১টা থেকেই নিউইয়র্কের বিভিন্ন বোরো থেকে অংশগ্রহণকারীরা পার্কে জড়ো হতে থাকে। সকালের নাস্তা বিতরণের পর শুরু হয় মূল পর্ব। এ পর্বে ছিল শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন বয়সের বাচ্চাদের দৌড় প্রতিযোগিতা, মহিলাদের মার্বেল দৌড়, পিলোপাস, পুরুষদের মোরগ লড়াই ও দৌড় প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। এতে সাবেক শিক্ষার্থীদের পরিবার ও সন্তানেরা অংশ নেন।
বনভোজনে সকাল ১১টায় ছিল বিশ্ববিদ্যালেয়ের প্রথম ব্যাচ থেকে শুরু করে ২৮তম ব্যাচ পর্যন্ত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ফটোসেশন ও পরিচয় পর্ব। এর পরপরই শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী ফুটবল টুর্ণামেন্ট। এতে সাস্টিয়ানরা লাল ও সবুজ জার্সিতে দুই দলে ভাগ হয়ে অংশ নেন। খেলায় লাল জার্সি চ্যাম্পিয়ান হয়।
পুরস্কার বিতরণের পূর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিশ্বদ্যিালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রথম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ফরিদ আলম ও কামাল হোসেন। ৎ
তারা বলেন, ‘ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনিয়র ও জুনিয়র শিক্ষার্থীরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে আমাদের সাস্টিয়ান বন্ধনকে শক্তিশালী করে তুলবে; যা পরবর্তী সকলের কাছে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।’
তারা ক্যাম্পাসের স্মৃতিচারণের সময় আবেগ আপ্লুত হয়ে যান।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এসোসিয়েশনের সভাপতি বেলায়েত চৌধুরী ও সঞ্চালা করেন সাধারণ সম্পাদক জাবেদুর মুনির।
বেলায়েত চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সব সাস্টিয়ানকে ইউনিক প্ল্যাটফর্মে এনে সাস্টিয়ান নেটওর্য়াককে আরো মজবুত ও গতিশীল করা। যাতে নতুন সাস্টিয়ানদের যত দ্রুত সম্ভব আবাসন, জবের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি কাঙ্খিত ক্যারিয়ার গঠনে ওর্য়াকশপ, কাউন্সিলিং, রেফারেন্স প্রদানসহ সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারি। এছাড়া, আমাদের আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য হল অদূর ভবিষ্যতে শাবিতে অধ্যয়নরত মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশীপ ব্যবস্থা করে দেয়া।’
বিভিন্ন ইভেন্ট পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মাহবুব আহমেদ মাসুম, আজহার আহমেদ, মইনুল হোসেন বাবু, ইমাম ফাহাদ, ফারহানা ইসলাম, মিসকাত জাহান নিসু, হুমায়রা সুলতানা, সুবিন পুরুকায়স্থ। পিকনিকের রেজিস্ট্রেশনের দায়িত্বে ছিলেন তাসফিক।
অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন আমিনুল চৌধুরী (ছুট্টি ), টিপু, রাজেশ কুমার শাহা, তিতুমীর আলম, সঙ্গমিত্র দেব মুন্নী, ওবাইদুর ইমন, গোপন দাস, মৌসুমি, জাবেদুল হক, শোয়েব, হুমাইয়ারা সুলতানা, মো. আবু বকর সিদ্দিক, নাজনীন আক্তার, আলমগীর হোসেন, ওমর ফারুক, প্রতিভা রাণী দাস, ফাতমো জোহরা।
শেষে খেলাধুলা ও র্যাফেল ড্রতে অংশগ্রহণকারী জয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মোহাম্মদ ফরিদ আলম, কামাল হোসেন, বেলায়েত চৌধুরী, জাবেদুল মুনির, আহমেদুর রহমান রণি, আজহার আহমেদ।
বনভোজনের আকর্ষণ বাচ্চাদের জন্য কটন ক্যান্ডি, পপকর্ন ও আইস কোণ মেশিন কর্ণারের সহযোগিতায় ছিল নিউইর্য়ক সিটি ও স্টেট সার্টিফাইড ভূইয়া কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, একে কনসাল্টটিং ফার্ম ও পেস্ট টার্মিনেটর। বিভিন্ন ইভেন্ট ও র্যাফেল ড্রয়ের বিভিন্ন পুরস্কার স্পন্সরের মধ্যে মিডোব্রুক ফাইনান্সিয়াল মর্টগেজ ব্যাংকার্স কোম্পানি, সিলেট মটরস, ডাইনামিক ট্যা এন্ড একাউন্টিং সার্ভিসেস, স্টারলিং ডায়াগনস্টিক ব্রঙ্কস, জায়ানাস ফ্যাশন, মাহরিণ মাল্টি সার্ভিস, ব্রাদার্স কন্সট্রাকশন কোম্পানি, কোর মাল্টি সার্ভিসেস, জালালাবাদ ট্রাভেলস, সেলিম বিরানী ও আশা হোমকেয়ার, সাস্টিয়ান হুমাইয়রা সুলতানা, ফারহানা আহমেদ, মিসকাত জাহান নিশু অন্যতম।