বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

অবৈধ সম্পদ অর্জন/রিজেন্ট সাহেদের তিন বছরের জেল ও লাখ টাকা জরিমানা

সোমবার, আগস্ট ২১, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ করিমের তিন বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদন্ডের পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা রায় ঘোষণার দিন হতে ৬০ কর্ম দিবসের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায় রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন।

সোমবার (২১ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এ রায় ঘোষণা করেন। দুদকের আইনের ২৬ (২) ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার এ কারাদন্ড ও জরিমানার আদেশ দেয়া হয়। অপর দিকে, দুদক আইনের ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে না পারায় এ ধারা থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার আগে কারাগার থেকে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর নির্ধারিত ২১ কার্য দিবসের মধ্যে সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিতে সাহেদকে নোটিশ দেয় দুদক। এ সময়ের মধ্যে তিনি সম্পদের হিসাব জমা না দেয়ায় তাকে আরো ১৫ কার্য দিবস সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। তবে, তিনি বর্ধিত সময়ের মধ্যেও সম্পদ বিবরণী জমা না দেয়ায় অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে এক কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া যায়।

এ অভিযোগে ২০২১ সালের ১ মার্চ সাহেদের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা করা হয়। পরে, ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল মামলায় অভিযোগ গঠন করে সাহেদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন আদালত। এ মামলায় দশজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনে মামলায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। এছাড়া, অস্ত্র আইনের ১৯ (এফ) ধারায় তার সাত বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত। উভয় সাজা একসাথে চলবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেন।

২০২০ সালের ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। এ ঘটনার পর পালিয়ে যান সাহেদ। ২০২০ এর ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে, তাকে হেলিকপ্টারে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনা হয়।

করোনা পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্টসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে করা মামলায় ২০২০ এর ১৬ জুলাই সাহেদকে দশ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। এরপর, ১৯ জুলাই তাকে নিয়ে উত্তরার বাসার সামনে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। সেখানে সাহেদের নিজস্ব সাদা প্রাইভেটকার থেকে পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, দশ বোতল ফেনসিডিল, একটি পিস্তল ও একটি গুলি উদ্ধার করা হয়। এরপর উত্তরা পশ্চিম থানায় অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়। পরে, ঢাকাসহ পুরো দেশে তার বিরুদ্ধে ৩১টি মামলা হয়।এর মধ্যে ঢাকায় ২৫টি, সিলেটে, চট্টগ্রাম ও সাতক্ষীরায় দুইটি করে। অধিকাংশ মামলাই প্রতারণার অভিযোগে করা হয়। এরমধ্যে সিলেটের দুইটি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।