ছাতক, সুনামগঞ্জ: দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ‘প্রমোটিং ওয়াটার রিপ্লেনিশমেন্ট অ্যান্ড ওয়াশ সার্ভিসেস’ শীর্ষক প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন সম্পন্ন করেছে ওয়াটারএইড বাংলাদেশ। আয়োজনের অংশ হিসেবে সুনামগঞ্জের ছাতকে হাজী রইস আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও রহমতপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে মানসম্মত ওয়াশ সুবিধা উপকরণও কর্তৃপক্ষদের হস্তান্তর করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
২৮ ও ২৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে শিক্ষার্থী, জনসাধারণ ও অতিথিরা অংশ নেন। এর মাধ্যমে অঞ্চলটিতে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য সুবিধা (ওয়াশ) প্রসঙ্গে উন্নয়ন ও সচেতনতা বৃদ্ধির ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
জলবায়ু ঝুঁকির সম্মুখীন জনগোষ্ঠীর কল্যাণে ওয়াশ পরিষেবার পরিসর বৃদ্ধির লক্ষ্যে দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, আইডিইএ এবং ছাতকের স্থানীয় সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই প্রকল্পের উদ্যোগ গৃহীত হয়, যার সফল বাস্তবায়ন জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সম্প্রদায়ের কল্যাণে ওয়াশ সুবিধা নিশ্চিত হবে।
প্রথম দিনে হাজী রইস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নুরের জামান চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন পুলিন চন্দ্র রায়, হাসিন জাহান, পার্থ হেফাজ শেখ।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, ‘এই স্যানিটেশন কমপ্লেক্সটিকে টেকসই করার জন্য যথাযথ অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন। আমি সব শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীকে এই কমপ্লেক্সেটির যথাযথ অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে কার্যকর রাখতে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
মো. নুরের জামান চৌধুরী প্রত্যন্ত অঞ্ছলের স্কুলে এমন আধুনিক স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ও বিশেষ করে মেয়েদের জন্য আলাদা ব্যবস্থাকে সাধুবাদ জানান।
আয়োজনের দ্বিতীয় দিনে রহমতপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে ওয়াশ সুবিধা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যোগ দেন সিভিল সার্জন ডাক্তার আহম্মদ হোসেন ও ডাক্তার রাজীব চক্রবর্তী।
প্রকল্প বাস্তবায়নে ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, আইডিইএ এবং সংশ্লিষ্ট সকলের এ প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রাজীব চক্রবর্তী। কমিউনিটি ক্লিনিকে উন্নত স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি ছাতকের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আরো বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকে এই ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
সিভিল সার্জন স্যানিটেশন কমপ্লেক্স দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে আধুনিক স্যানিটেশন ও পানির সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদসহ কমিউনিটি ক্লিনিকে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেন এবং পাশাপাশি এখানে ডেলিভারি সেবা চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন।
পার্থ হেফাজ শেখ বলেন, ‘আমাদের দেশের অর্ধেকেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা নেই। বাংলাদেশ সরকারের জন্য আমরা শুধু একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করার চেষ্টা করছি যাতে করে প্রান্তিক ও হার্ড টু রিচ এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা পৌঁছানো যায়।’
দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট সাদিয়া মাসবার্গ বলেন, ‘নিরাপদ পানির টেকসই সংস্থান নিশ্চিতে কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন কৌশলগত অগ্রাধিকার দেয় ও বাংলাদেশে নিরাপদ পানির টেকসই সংস্থানের উন্নতিতে স্থানীয় অংশীদারদের এই উদ্যোগকে সমর্থন করতে পেরে আমরা গর্বিত।’
এ সময় নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও উন্নত স্বাস্থ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে স্কুল ও কমিউনিটি ক্লিনিকে নতুন নির্মিত ওয়াশ সুবিধার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।