বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্বাস্থ্য সেবা খাতে প্রয়োজন সফটওয়্যার ও অবকাঠামোর উন্নয়ন

রবিবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্য পরিষেবায় প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত অবকাঠামো উন্নয়ন ও ফটওয়্যারের ওপর জোর দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন খাত-সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি হুয়াওয়ে এবং ইজেনারেশন লিমিটেড ‘হেলথকেয়ার ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সফটওয়্যার ইনোভেশন ইন বিল্ডিং স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠক থেকে এমন মতামত উঠে এসেছে। গুলশানে হুয়াওয়ে বাংলাদেশ একাডেমিতে আয়োজিত এ গোল টেবিল বৈঠকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন নীতিনির্ধারক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, আইটি ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের মানুষের প্রাথমিক মৌলিক চাহিদা হচ্ছে স্বাস্থ্য। স্বাস্থ্য সেবায় সবার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে এ খাতের ডিজিটালাইজেশন সময়ের প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবা খাতের ডিজিটালাইজেশনের জন্য আইসিটি অবকাঠামো এবং সফটওয়্যার সার্ভিস নিয়ে একসঙ্গে কাজ করছে হুয়াওয়ে এবং ইজেনারেশন লিমিটেড। এ আয়োজনের মূল বিষয় ছিল জনগণের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা সুবিধা পাওয়ার অভাব, অপর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীদের পাশাপাশি আইটি অবকাঠামো, হাসপাতাল অটোমেশন এবং সফটওয়্যারের ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডাক্তার মুহা. শারফুদ্দিন আহমেদ ও সেশনটি সঞ্চালন করেন ইজেনারেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান এসএম আশরাফুল ইসলাম।

হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়া এন্টারপ্রাইজ বিজনের গ্রুপের ডেপুটি সিইও ঝাংচেং (জাস্টিন); ইজেনারেশন লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সৈয়দা কামরুন আহমেদ; ইজেনারেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহসান; স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) পরিচালক (এমআইএস) অধ্যাপক ডাক্তার শাহাদাত হোসেন; কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালের (সিএমএইচ) আইটি সেন্টারের ওআইসি লেফটেন্যান্ট কর্ণেল শাহ মো. ইশতিয়াক সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।

মুহা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আজকের অনুষ্ঠানটি আয়োজনের জন্য আমি ইজেনারেশন ও হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই সেশন থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা আমাদের স্বাস্থ্য খাতের ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।’

ঝাংচেং (জাস্টিন) বলেন, ‘আইসিটি ধীরে ধীরে হাসপাতালগুলোকে ই-হাসপাতালে পরিণত করছে এবং এর ফলে নতুন ধরনের স্বাস্থ্য সেবার মাধ্যমে আরো বেশি মানুষকে সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে। আমরা ৯০টিরও বেশি দেশের দুই হাজার ৮০০টিরও বেশি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। যেহেতু আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, তাই বাংলাদেশের জন্য হাসপাতাল সেক্টরের আইসিটি অবকাঠামোর উন্নয়নে আরো বেশি মনোযোগ দেয়া জরুরি।’

‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবা খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এই খাতকে আরো সমৃদ্ধ করবে। হুয়াওয়ে গেল ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশে আইসিটি অবকাঠামোর উন্নয়নের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ও ভবিষ্যতেও আমরা আমাদের উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যেতে চাই।’

এসএম আশরাফুল ইসলাম বিশ্বব্যাপী পেশাদার চিকিৎসকদের ঘাটতির কারণে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুতর সমস্যার ওপর জোর দেন। তিনি চিকিৎসা পরিষেবার ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং এই চাহিদাগুলি পূরণের সীমাবদ্ধতার মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে এনে এই সমস্যাটি মোকাবিলা প্রযুক্তি যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে তার উপর গুরুত্ব প্রদান করেন। তিনি ইজেনারেশনের ডিজিটাল সল্যুশনের বিভিন্ন পোর্টফোলিও তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে টেলিমেডিসিন, আইসিইউ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ডস (ইএইচআর) এবং মেশিন ইন্টিগ্রেশন। এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তিগুলো স্বাস্থ্য সেবা খাতের সক্ষমতা, দক্ষতা এবং সামগ্রিক উত্পাদনশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করার ক্ষমতা রাখে।

সৈয়দা কামরুন আহমেদ তার মূল উপস্থাপনায় একটি মানসম্মত হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এইচএমআইএস) মাধ্যমে কীভাবে ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড (ইএমআর) রোগীর বাড়ি থেকে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে পারে; মেডিকেল রেকর্ড, রোগীর অতীত ইতিহাস, প্রেসক্রিপশন ও রিপোর্ট সহজে দেখার অভিজ্ঞতা ইত্যাদি সহজতর করতে পারে- এর উপর আলোকপাত করেন। এ ধরনের সমাধান ব্যবহার করে এইচএমআইএস একটি হাসপাতালের বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও খরচ সমন্বয়ে কীভাবে আরো দক্ষ হতে সাহায্য করতে পারে, তিনি সে বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও, তিনি ইজেনারেশনের তৈরি করা ইগহেলথ/ইজিহেলথ নামে একটি হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এইচএমআইএস) উপস্থাপন করেন, যা পাঁচটি বিজিবি হাসপাতালে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে।

হুয়াওয়ের সিনিয়র ম্যানেজার মো. আনজামুল আরেকটি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ডিজিটাল স্বাস্থ্য পরিষেবায় প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর গুরুত্ব তুলে ধরেন।

শামীম আহসান সমাপনী বক্তৃতায় স্বাস্থ্য সেবা সংস্থা, প্রযুক্তি সমাধান প্রদানকারী ও স্বাস্থ্য সেবা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারকদের মধ্যে সহযোগিতা কীভাবে স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য একটি সামগ্রিক ডিজিটাল হেলথকেয়ার ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে অবদান রাখতে পারে, সে সম্পর্কে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেন।