শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

কুইন্স হাসপাতালে বাংলাদেশী আমেরিকান জিহানের আঁকা ম্যুরাল উদ্বোধন

সোমবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি হেলথ অ্যান্ড হসপিটাল বিভাগের কুইন্স হাসপাতালে ম্যুরাল এঁকেছেন বাংলাদেশী আমেরিকান তরুণ শিল্পী জিহান ওয়াজেদ। গেল ১৫ নভেম্বর দুপুরে ছিল এক হাজার ২৫০ বর্গফুটের ‘রুটস অফ মেডিসিন’ ম্যুরালটির উদ্বোধন। কুইন্স হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী নেইল জে মুর ও জিহান ওয়াজেদ যৌথভাবে উন্মোচন করেন ম্যুরালটি।

এনওয়াইসি হেলথ এন্ড হসপিটাল বিভাগের তথ্যানুসারে, আমেরিকার পাবলিক হাসপাতালের কমিউনিটি ম্যুরাল প্রকল্পের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় ম্যুরাল।

উদ্বোধনের পূর্বে মেইন হসপিটাল এট্রিয়ামে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন কুইন্স হাসপাতালের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাক্তার এরিক ওয়েই, এসিসস্ট্যান্ট ভাইস চেয়ারম্যান রিক লুফটগ্লাস, কুইন্স হসপিটাল কমিউনিটি বোর্ড চেয়ারম্যান রবিন হোগানস, কুইন্স মেডিকেল নির্বাহী কমিটির পরিচালক ডাক্তার মার্সি স্টেইন এলবার্ট।

জ্যামাইকার কুইন্স হসপিটালের মূল প্রবেশপথের ডানে প্রথম ও দ্বিতীয় তলা মিলে প্রশস্ত লবির দেয়ালে ম্যুরালটি হাসপাতালের সৌন্দর্য্য বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে। নিউইয়র্ক সিটির হেলথ অ্যান্ড হাসপাতাল বিভাগ ১৯৩০ সাল থেকে সিটির হাসপাতালগুলোতে ম্যুরাল ও চিত্র স্থাপনের জন্য ‘কমিউনিটি ম্যুরাল প্রজেক্ট’ নিয়েছে এবং এর আওতায় জিহানের এ ম্যুরালটি স্থাপন করা হয়েছে। সিটির হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার ‘আর্টস ইন মেডিসিন ডিপার্টমেন্ট’ এ প্রজেক্টের দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত। কুইন্স হাসপাতালে জিহানের ম্যুরালের জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়েছে লোরি এম টিশ ইল্যুসিনেশন ফান্ড।

ম্যুরাল উদ্বোধনকালে রিক লাফটগ্লাস বলেছেন, ‘ম্যুরালটি কুইন্স হাসপাতালের আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে।’

শিল্পকর্মের মাধ্যমে রোগী ও পরিবারের সদস্যদের মনে প্রশান্তি আনার প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের উদ্যোগে অংশ নিতে পেরে আমরা গর্বিত।’

অনুষ্ঠানে জিহান ওয়াজেদ বলেন, ‘আমি আটটি ফুলের বৈচিত্র্য তুলে ধরেছি ম্যুরালে। যার মধ্যে প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে এই হাসপাতালে আসা নানা কম্যুনিটির মানুষদের। আর গাছের লতাপাতার মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছি, এত বৈচিত্র সত্ত্বেও আমরা পরস্পর কত ঐক্যবদ্ধ।’

তিনি নিউইয়র্ক সিটি হেলথ এন্ড হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তাকে এ ধরনের একটি কাজ করার সুযোগ দেয়ার জন্য।

সিটি হাসপাতালের আর্টস ইন মেডিসিন প্রোগ্রামের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট লারিসা ট্রিন্ডার বলেন, ‘জিহানের ম্যুরাল একটি বৃহৎ আকারের অভিজ্ঞতা; যা কুইন্স হাসপাতালের ব্যস্ত লবির মধ্যে প্রকৃতিকে এনেছে বাস্তবে। ম্যুরালে জীববৈচিত্রকে তুলে ধরা হয়েছে; যা মানুষের রোগ নিরাময়ে ভূমিকা রাখে ও প্রশান্তি আনে রোগীর মনে। আমরা জনস্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাবের জন্য ম্যুরালগুলিকে স্বাস্থ্য সেবার একটি পরিষেবা হিসাবে বিবেচনা করি।’

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিতে ‘রুটস অফ মেডিসিন’ বা ‘ওষুধের মূল’ হল আটটি ফুল ক্যালেন্ডুলা, ল্যাভেন্ডার, ক্যামোমাইল, ইচিনেসিয়া, তিসি (ফ্ল্যাক্স সিড), গোলাপের পাপড়ি, সেন্ট জনস ওয়ার্ট এবং কলমি ফুল (ন্যাস্টার্টিয়াম)। এগুলোর মধ্যে ল্যাভেন্ডার অস্থিরতায় প্রশান্তি ও অবসাদ আনতে; ক্যামোমাইল হজমে সহায়তা করতে; ক্যালেন্ডুলা প্রদাহ ও ক্ষত-নিরাময়ে; ইচিনেসিয়া রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধিতে; তিসি বীজ হৃদপিণ্ডকে ঠিক রাখতে ও হজমে সহায়তা করতে; গোলাপের পাপড়ি প্রশান্তি আনতে; সেন্ট জনস ওয়ার্ট বিষন্নতা দূর করতে ও উদ্বেগ প্রশমনে এবং সর্বোপরি কলমি ফুল বা ন্যাস্টার্টিয়াম ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বৃদ্ধিতে সহায়ক।’

জ্যামাইকার কুইন্স হসপিটাল সেন্টারের সৌন্দর্য বিকাশে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত তরুণ শিল্পী জিহান ওয়াজেদের আঁকা ম্যুরালে ‘রুটস অফ মেডিসিন’গুলো অলঙ্কৃত হয়েছে।