রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

গাজার জন্য ‘বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ দিবসে’ ওয়াশিংটন ও লন্ডনে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ

রবিবার, জানুয়ারী ১৪, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতির দাবিতে ও ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ সমর্থনের বিরোধিতা করে ‘বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ দিবসের’ অংশ হিসেবে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন, যুক্তরাজ্যের লন্ডন এবং অন্যত্র হাজার হাজার ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী মিছিল করেছে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ৯৯তম দিনে সংহতি প্রদর্শনে ওয়াশিংটনে জড়ো হওয়া বিশাল জনতার বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী কেফিয়াহ পরেছে ও জনতা ফিলিস্তিনি পতাকা নেড়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ‘এখনই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করুন’ বলে স্লোগান দেয় এবং তাদের হাতে বহন করা ব্যানার ও পোস্টারে লেখা ছিল ‘মুক্ত প্যালেস্টাইন’ চাই ও ‘গাজার যুদ্ধ শেষ করুন’। খবর এএফপির।

হোয়াইট হাউসের কয়েক ব্লক পরে একটি মঞ্চে, বেশ অনেক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান, যারা মূলত গাজার বাসিন্দা কিন্তু এখন মিশিগান থেকে টেক্সাস পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তারা গাজায় নিহত বা আহত তাদের বন্ধু ও আত্মীয়দের আবেগঘন বিবরণ দিয়েছেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ইসরায়েলের জন্য সামরিক ও আর্থিক সহায়তা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

একজন বক্তা বলেন, ‘ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে চাপ দিয়ে ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন সহজেই এই উন্মাদনা বন্ধ করতে পারেন’।

এ সময় ব্যাপক করতালি দিয়ে বিক্ষোভকারীরা এই বক্তব্যে সমর্থন জানায়।

গেল ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের প্রতিবাদে লন্ডনে সপ্তম বারে শরিবার (১৩ জানুয়ারি) ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ হয়েছে।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার অজুহাতে প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় ধ্বংসাত্মক অভিযান শুরু করে। ইসরায়েল হামাসকে ধ্বংস করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ও তিন মাসের বেশী সময় ধরে গাজায় নির্বিচার ও অবিরাম বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। এতে অন্তত ২৩ হাজার ৮৪৩ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সর্বশেষ এই মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করেছে।

লন্ডন বিক্ষোভের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) প্রায় এক হাজার ৭০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

২৭ বছর বয়সী স্বাস্থ্য সেবা কর্মী মালিহা আহমেদ, যিনি তার পরিবারের সঙ্গে মিছিলে ছিলেন, তিনি বলেছেন,‘আমরা ফিলিস্তিনের জনগণকে দেখাতে চাই যে, আমরা তাদের সঙ্গে আছি ও আমাদের সরকারের বিরুদ্ধেও কথা বলতে চাই।’

মালিহা আহমেদ বলেন, ‘ইসরায়েলকে যা করছে, তা চালিয়ে যেতে দেয়ার জন্য তারা (ব্রিটিশ সরকার) একটি খুব বড় ভূমিকা পালন করছে ও এটি গ্রহণযোগ্য নয়।’

আরেকজন মিছিলকারী, ৩৭ বছর বয়সী দীপেশ কোথার বলেছেন, ‘বসে বসে বিশ্বকে কিছুই না করতে দেখা খুবই হতাশাজনক।’

তিনি বলেন, ‘তাই আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সমর্থন জানাতে ও গোটা পৃথিবীর সরকারের প্রতি আমাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে বেরিয়ে আসি।’

ইরান-সমর্থিত গ্রুপগুলোর গাজার সাথে সংহতি প্রকাশ করে লোহিত সাগরে জাহাজে হামলার পর এই সপ্তাহে ইয়েমেনে হুথি ঘাঁটির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ বিমান হামলার কারণে শনিবারের (১৩ জানুয়ারি) বিক্ষোভগুলো বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। একটি ব্রিটিশ সংগঠিত জোটের ডাকা এই ‘বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ দিবসে’ ৩০টি দেশে বিক্ষোভ হয়েছে।

এই জোটের অংশ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ অভিযানের কেট হাডসন বলেছেন, ‘এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠানটি ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও সব ফিলিস্তিনির জন্য একটি স্থায়ী রাজনৈতিক নিষ্পত্তি দাবি করছে।’

তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশ সরকারকে অবশ্যই গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস যুদ্ধের প্রতি সমর্থন বন্ধ করতে হবে ও এর যুদ্ধাপরাধের নিন্দায় বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগ দিতে হবে।’