ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘অনেক ধরনের দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান থাকতে পারে। নেতানিয়াহু নিশ্চয়ই এর কোনটির বিষয়ে একমত হবেন।’ খবর ভয়েস অব আমেরিকার।
ফিলিস্তিনে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বিষয়ে ইসরায়েলকে পরামর্শ দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাবের প্রকাশ্য বিরোধিতা করে নেতানিয়াহু বলেন, ‘জর্ডান নদীর পশ্চিমের সম্পূর্ণ ভূমির ওপর ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। অর্থাৎ, ফিলিস্তিনও যাবে তাদের অধিকারে।’
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহুর এই মন্তব্য সম্পর্কে নিজ অবস্থান ব্যক্ত করেন জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না, তিনি (নেতানিয়াহু) দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তার বক্তব্য আমাদের সামনে ভুলভাবে আসতে পারে। পৃথিবীতে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বহু ধরন রয়েছে। আমি মনে করি, তার মধ্যে কোন একটিতে তিনি রাজি হবেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবকৃত দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বিরোধিতা করায় ইসরায়েলে সামরিক সহায়তায় শর্ত আরোপ করা হবে কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে বাইডেন বলেন, ‘আমি মনে করি, এ বিষয়ে আমাদের কাজ করার আছে। অবশ্যই আমরা এমন কোন সমাধান বের করব; যা কার্যকর হবে।’
গাজা কিংবা ফিলিস্তিনকে নিরস্ত্রীকরণ করার ইসরায়েলের লক্ষ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে বাইডেন বলেন, ‘জাতিসংঘে এমন বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে, যাদের নিজস্ব সেনাবাহিনী নেই। কোন ভূখণ্ডের রাষ্ট্র হওয়ার জন্য তার নিজস্ব সেনাবাহিনী থাকতেই হবে- এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই।’
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর নির্বিচার হামলায় গাজায় মৃতের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজারে গিয়ে পৌঁছেছে। সেই সাথে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ৮৫ শতাংশ গাজাবাসী। এ অবস্থায় গাজায় দ্রুত যুদ্ধের ইতি টানার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের চাপের মুখে রয়েছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের মিত্র দেশগুলোও গাজায় আক্রমণের লাগাম টানতে ও যুদ্ধের টেকসই সমাপ্তির জন্য অর্থপূর্ণ আলোচনায় বসতে ইসরায়েলকে চাপ দিচ্ছে। সংকট সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান ফর্মুলাকে নয়া করে কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছে তারা।
তবে এসব প্রস্তাব কানে না তুলে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘এটি একটি প্রয়োজনীয় শর্ত ও এটি (ফিলিস্তিনের) সার্বভৌমত্বের ধারণার সাথে সাংঘর্ষিক। কী করতে হবে? আমি আমাদের আমেরিকান বন্ধুদের এই সত্যটি বলি ও আমাদের ওপর এমন বাস্তবতা চাপিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টারও বিরোধিতা করি, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর।’