ঢাকা: শ্রম শিল্পে ‘থ্রেস হোল্ড’ (ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সইয়ের হার) কমানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সাথে যুক্তরাষ্ট্র পার্টনার হিসেবে কাজ করতে চায় বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন, এটা তাদের নিকট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু। এটা বাংলাদেশ সরকার ও আওয়ামী লীগের সরকারের কাছেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়টি নিজের হাতে রেখেছেন।’
রোববার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের লেবার অ্যাটাসে লিনা খান ও প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) ম্যাথিউ বেহর সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে আনিসুল হক এসব কথা বলেন। এ সময় আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের দায়িত্ব পালনকারী) হাফিজ আহমেদ চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আইন মন্ত্রী আরো বলেন, ‘শ্রমিকদের সম্মতি বা সই নেয়ার হার পর্যায়ক্রমে কমিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া সহজ করা হবে বলে তাদের জানিয়েছেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিক অধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের লেবার অ্যাটাসে আলোচনা করেছেন। এই আলোচনা গেল বছর থেকে তাদের সাথে আমাদের হচ্ছে। সময়ে সময়ে যে অগ্রগতি হয়েছে ও আরো কোন অগ্রগতি সম্ভব কি না, সেটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, রাষ্ট্রপতির কাছে যে শ্রম আইনটা গিয়েছিল, সেটি একটি বিশেষ কারণে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই কারণটা পূর্বেও আপনাদের ব্যাখ্যা করেছি। সেই বিষয়টা আলোচনায় এসেছে।’
আনিসুল হক বলেন, ‘আমি এটাও বলেছি, আগামী বুধবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটা টিমের সাথে আলোচনায় বসব। আইএলওর গভর্নিং বডির মিটিং হচ্ছে মার্চ মাসে, আমাদের অগ্রগতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহুল হওয়ার জন্য ও দুয়েকটা বিষয় তারা জানতে চেয়েছেন, সেই মিটিং এরপরে তাদের আমরা জানাব। আমাদের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে ও যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি বা এমন কিছু তোলেনি।’
থ্রেস হোল্ড নিয়ে তাদের বক্তব্য কী, এ ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, ‘থ্রেস হোল্ড নিয়ে তাদের বক্তব্য আছে, এটা সব সময়ই ছিল। থ্রেস হোল্ডের বিষয়ে আমি বলেছি, এটা আমরা ১৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। সেখানে একটা কন্ডিশন আছে, এটা শুধু এপ্লিক্যাবল হবে যে ফ্যাক্টরিতে তিন হাজার বা এর বেশি শ্রমিক আছে সেখানে। সেটার বিষয়ে একটা আলোচনা হতে পারে। তারা এটাও বলেছেন, তিন হাজার বা তিন হাজারের বেশি শ্রমিক আছে- এমন কারখানা বহু কম। এই বিষয়ে যখন প্রশ্ন এসেছে, তখন আমি বলেছি, এটা নিয়ে স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলোচনা করে আমরা এটা সিদ্ধান্ত নিতে পারব।’
তারা কী শ্রমিকদের সইয়ের হার দশ শতাংশ চাইছে কি-না, এ ব্যাপারে আনিসুল হক বলেন, ‘এটা জেনারেল ইয়ে যে, দশ শতাংশ, আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি, আমাদের ইমপ্লয়ার্স এবং ওয়ার্কার্স ফেডারেশন যেগুলো আছে, তারা সব সময় বলে আসছে ধীরে ধীরে কমানোটাই তাদের জন্য ভাল হবে। বাংলাদেশ শ্রমিকের অধিকারের ক্লাইমেট অনুযায়ী এটা কমানো হবে। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। সেজন্য আমরা ধীরে ধীরে কমানোর ব্যাপারে গুরুত্ব দেব।’