শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

সিরিয়া ও ইরাকে ইরান সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

শনিবার, ফেব্রুয়ারী ৩, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

সিরিয়া/ইরাক: ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ও ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়ার সীমান্তের কাছে জর্ডানে মার্কিন একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ৮৫টির বেশি লক্ষ্যে একযোগে এ বিমান হামলা চালানো হয়।

জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে রোববারের (২৮ জানুয়ারি) ড্রোন হামলায় তিনজন মার্কিন সেনা নিহত ও আহত হয়েছে ৪১ জন।
ওই হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দায়ী করে আসছিল ওয়াশিংটন। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থিত ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালানোর পরিকল্পনায় অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজ থেকে আমাদের প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমাদের সময়মত ও পছন্দের স্থানে এ হামলা চলতে থাকবে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য বা পৃথিবীর অন্য কোথাও সংঘাত চায় না যুক্তরাষ্ট্র। তবে, যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায়, তাদের সকলকে এটি জানতে দিন, কেউ যদি কোন মার্কিনীর ক্ষতি করে, তবে আমরা তার প্রতিক্রিয়া জানাব।’

শুক্রবারের (২ জানুয়ারি) এ হামলায় দূরপাল্লার বি-১ বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়িয়ে নেয়া হয়েছে। তবে, ইরানের ভূখন্ডে সরাসরি হামলা চালায়নি যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী।

হোয়াইট হাউস বলেছে, ‘ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে চালানো যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় সময় লেগেছে ৩০ মিনিট। আর এ হামলা স্পষ্টতই সফল।’

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসসি) মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিমান উড়িয়ে নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে বি-১ বোমারু বিমানও ছিল। এসব বিমানে ১২৫টিরও বেশি নির্ভুল নির্দেশিত যুদ্ধাস্ত্র বহন করা হয়।’

এ দিকে, শুক্রবারের (২ জানুয়ারি) হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বিবৃতি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘সাতটি স্থানে ৮৫টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে একযোগে হামলা চালানো হয়েছে। ইরাকে তিনটি ও সিরিয়ায় চারটি স্থানে এসব হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া, লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র, সামরিক রসদভান্ডার ও ড্রোন স্টোরেজ ইউনিট। কোন পক্ষই এসব হামলায় হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দেয়নি।’

এ দিকে, নিজেদের ভূখন্ডে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা চালানোকে ‘মার্কিন আগ্রাসন’ বলেছে সিরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম শুক্রবার (২ জানুয়ারি জানায়, সিরিয়া-ইরাক সীমান্ত এলাকায় মরুভূমিতে হামলা চালানো হয়েছে।

ইরাকের সামরিক বাহিনীও কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এ হামলাকে সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন উল্লেখ করে ইরাকের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহইয়া রসুল বলেছেন, ‘সীমান্ত এলাকায় হামলার ফলে ইরাক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিতে পারে।’

যদিও যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘ইরাককে জানিয়েই দেশটির নানা স্থানে হামলা চালানো হয়েছে।’

গেল ৭ অক্টোবর ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত শুরুর পর থেকে ইরাক, সিরিয়া ও জর্ডানে ১৬৫ বারের বেশি হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী। এ প্রেক্ষিতে বিশ্লেষকদের আশংকা, ইরাক ও সিরিয়ায় নয়া করে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কারণে গেল প্রায় চার মাস ধরে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের জেরে পূর্বে থেকেই উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য দীর্ঘ মেয়াদে অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।