/ 
প্রিন্ট করুন
মস্কো, রাশিয়া: রাশিয়া মহাকাশে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করে শত্রুপক্ষের স্যাটেলাইট অকেজো করার ক্ষমতা আয়ত্ত করার চেষ্টা করছে- যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার এমন প্রতিবেদন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও সহযোগী দেশগুলোতে উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্য ও নিম্নকক্ষের ইন্টেলিজেন্স কমিটির সভাপতি মাইকেল টার্নারের মন্তব্যকে ঘিরে ব্যাপারটি প্রকাশ্যে চলে আসে। রাশিয়া অবশ্য এমন অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে না জেনে তিনি সরাসরি কোন মন্তব্য করবেন না।’
তবে, মহাকাশে রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবাণীর পেছনে তিনি অন্য কারণ দেখছেন। ইউক্রেনের জন্য সে দেশের সহায়তার প্রস্তাব এখনো সংসদে অনুমোদন করাতে না পেরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন মরিয়া হয়ে যে কোনভাবে সেই লক্ষ্য পূরণ করতে চাইছে বলে পেসকভ পাল্টা অভিযোগ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের অনুমোদন পেলেও নিম্নকক্ষে সেই বিল এখনো আটকে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসনের শীর্ষ সদস্যরা ব্যাপারটি নিয়ে এখনো স্পষ্ট বক্তব্য না রাখলেও আলবেনিয়া সফররত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী দেশগুলোর সাথে সে ব্যাপারে আলোচনা করছে।’
তিনি মনে করিয়ে দেন, রাশিয়া এখনো সেই ক্ষমতা আয়ত্ত করতে পারেনি। তবে, রাশিয়ার হাতে সম্ভাব্য এ সামরিক ক্ষমতার ব্যাপারটিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
অন্য দিকে, হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘বাইডেন রাশিয়ার সাথে সরাসরি কূটনৈতিক যোগাযোগের অনুরোধ করেছেন।’ গোপনীয়তার কারণে বিস্তারিতভাবে ব্যাপারটি সম্পর্কে মুখ খুলতে না পারলেও কিরবি স্পষ্ট বলেন, ‘এ মুহূর্তে কারো নিরাপত্তার কোন হুমকি নেই।’
এ ছাড়া জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস ন্যাটো প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলনে বলেন, ‘ব্যাপারটি তার নিকট একেবারেই নয়া। তবে, গোয়েন্দা সংস্থার সেই প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হবে।’
এ দিকে, মহাকাশে রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্রের সম্ভাবনা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন এখনো প্রকাশ্যে বিস্তারিত না জানালেও বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে জল্পনাকল্পনা শুরু করে দিয়েছেন। তাদের মতে, রাশিয়া সম্ভবত মহাকাশে পরমাণু বিস্ফোরণের মাধ্যমে একাধিকভাবে স্যাটেলাইট অচল করে দেয়ার প্রযুক্তি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। এমন হুমকির মাধ্যমে গোটা পৃথিবীতে যোগাযোগ, পর্যবেক্ষণ, গোয়েন্দাগিরি ও কমান্ড-কন্ট্রোল বানচাল করা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এখনো এমন অস্ত্র নেই বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
বলে রাখাভাল, ১৯৬৭ সালের ‘আউটার স্পেস’ চুক্তির আওতায় বিশ্বের কক্ষপথ বা মহাকাশে কোন মারণাত্মক অস্ত্র মোতায়েন করা নিষিদ্ধ। তবে. সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের ক্রমাগত অবনতির কারণে একাধিক আন্তর্জাতিক সামরিক চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
