ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়ার জেষ্ঠ পরিচালক পরিচালক আইলিন লাউবাচার নিকট চিঠির একটি অনুলিপি হস্তান্তর করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো জো বাইডেনের চিঠির জবাব এটি। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান চিঠির মূল কপি হোয়াইট হাউসের কাছে হস্তান্তর করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘তারা বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের নয়া অধ্যায় চান।’
‘আমরা তাদের সাথে সম্পর্কের নয়া অধ্যায়ের সূচনা করতে চাই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে দেশগুলো উপকৃত হবে।’
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাছান মাহমুদের সাথে বৈঠকে আন্তঃসংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পরিচালক আইলিন লাউবাচার।
ইউএসএআইডিরের এশিয়া বিষয়ক সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার, পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতার ও ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সিডিএ হেলেন লাফাভে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অঞ্চলের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যমান সম্পর্ককে আরো গভীর করার জন্য নয়া পথ অন্বেষণকে কেন্দ্র করে আলোচনা হয়। বৈঠকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি খাতের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তির পক্ষে ও যে কোন ধরনের যুদ্ধের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি অর্জনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে তার সুবিধা ব্যবহার করার আহ্বান জানান।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন হাছান মাহমুদ।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যর্পণের ব্যাপারেও আলোচনা হয়।
একই সাথে র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর পূর্বে, জো বাইডেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে একসাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছিলেন। তিনি একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের পরবর্তী অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাওয়া বিষয়ে চিঠিতে বাইডেন বলেছেন, ‘আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, মানবিক সহায়তা বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য একসাথে কাজ অব্যাহত রাখতে তার প্রশাসনের আন্তরিক আকাঙ্ক্ষার কথা তিনি জানাতে চান।’
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বাইডেন বলেছেন, ‘সমস্যা সমাধানে আমাদের একসাথে কাজ করার দীর্ঘ ও সফল ইতিহাস রয়েছে এবং আমাদের শক্তিশালী মানুষে-মানুষে বন্ধনই এ সম্পর্কের ভিত্তি।’