শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

নগর উন্নয়নে দায়িত্ব পালনের তিন বছর ও আগামীর ভাবনা

শুক্রবার, মার্চ ৮, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী: বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিটি চট্টগ্রাম। গোড়াপত্তন থেকে ক্রমবিকাশের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম দেশের প্রধান অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ শহর ও বাণিজ্যিক রাজধানী হয়ে ওঠার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। মূলত বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলি নদীর সঙ্গমে প্রাকৃতিক পোতাশ্রয় ও বন্দরকে ঘিরে চট্টগ্রাম শহরের ক্রমবিকাশ। কাঁচা রাস্তাঘাট, খানাখন্দকে ভরা জঙ্গলাকীর্ণ চট্টগ্রামকে আধুনিক রূপদানের কাজ মূলত শুরু হয় ১৮৬৩ সালের ২২ জুন পৌরসভা ঘোষণার মধ্য দিয়ে। আরো নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে ১৮৬৪ সালে জুলাইয়ে মিউনিসিপ্যাল আইনের বিধানের আওতায় এনে চট্টগ্রামকে পরিকল্পিত শহরে রূপদানের কাজটি শুরু করেন ব্রিটিশরা। সেই থেকে তারা নয়া রাস্তা, লেন, গলি, আলো, পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা তৈরি করার কাজ শুরু হয়। পাশাপাশি, স্বাস্থ্য বিধানের জন্য নেয়া হয় নানা ব্যবস্থা।

প্রথমত চারটি ওয়ার্ড নিয়ে পৌর কার্যক্রম শুরু হলেও বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বৃদ্ধি করা হয় আরো একটি ওয়ার্ড। দশ দশমিক শুন্য নয় বর্গ কিলোমিটার নিয়ে যে চট্টগ্রাম পৌর প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়, তা পর্যায়ক্রমে মিউনিসিপ্যাল এবং সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত হয়ে ৪১টি ওয়ার্ডের ১৬০ দশমিক ৯৯ বর্গ কিলোমিটারের মেগা সিটি হয়েছে। এখানে আনুমানিক ৭০ লক্ষ মানুষের বসবাস এখন। এছাড়াও, আরো ২০ লক্ষ ভাসমান মানুষ রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগরে। ১৯৯০ সালের ৩১ জুলাই চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন নামের পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন করা হলেও প্রথম ১৯৯৪ সালে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে সিটি করপোরেশন এর মেয়রের দায়িত্ব পান চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। মিউনিসিপ্যাল থেকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত করার সময়ে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীকে মেয়র হিসেবে নিয়োগ দেয়া এবং ১৯৯১ সাল হতে ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন নিয়োগ প্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্বপালন করেন। ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচিত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী পুনরায় নির্বাচিত হয়ে টানা ১৭ বছর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত চতুর্থ পরিষদে মোহাম্মদ মনজুর আলম এবং পঞ্চম পরিষদে আ জ ম. নাছির উদ্দীন মেয়র হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। সর্বশেষ, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ষষ্ঠ পরিষদের মেয়র হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হই এবং একই সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে সুধী সমাজের সাথে মত বিনিময় করে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়র এর দায়িত্বভার নিই। চসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন ভাতা, অন্যান্য সেবা সংস্থাগুলোর বকেয়া বিলসহ নানামূখী সমস্যা ও ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে এবং বিশ্ব মহামারী করোনার ভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতিকে সাথে করে আমার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের তৃতীয় বর্ষ পূর্ণ হয়েছে সম্প্রতি। দায়িত্ব পালনে সফলতা কিংবা ব্যর্থতার বিবেচনা নগরের বাসিন্দা ও ভোটাররাই করবেন। আমার দিক থেকে কোন প্রকার গাফিলতি আমি করিনি ও চ্যালেঞ্জিং ইস্যুগুলোতে কোন শক্তির কাছে নমনীয় হইনি এতটুকু আমি জোর দিয়ে বলতে পারি।

সিটিতে যে কোন ধরনের সমস্যার জন্য সর্ব প্রথম সিটি কর্পোরেশনের দিকেই আঙ্গুল তুলে জনগণ। এটাকে আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখি। কারণ, সিটিতে যতগুলো সরকারী, আধা সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারী সেবা সংস্থা রয়েছে, তার মধ্যে একমাত্র সিটি কর্পোরেশনই জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে ও দায়িত্বে পরিচালিত হয়। তাই, সিটি কর্পোরেশনের জনসম্পৃক্ততা অন্য সব সেবা সংস্থার চাইতে বহু গুণে বেশী ও জনগন সিটি কর্পোরেশনের উপর প্রত্যাশী হয়ে থাকে বেশী।

তবুও জনগনের জানার জন্য উল্লেখ করতে চাই যে, আমাদের সিটি কর্পোরেশনের কাজের মধ্যেও বহু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সব ধরনের কাজে হাত দেয়ার এখতিয়ার সিটি কর্পোরেশনের নেই। সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত হয় স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯ এর আলোকে। মোট আটটি তফসিলে এ আইনের ১২৬টি ধারা আছে। আর এ ধারাগুলোতে একজন মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরদের সহায়তা নিয়ে মূলত ২৮ ধরনের কাজের ক্ষমতা রাখেন। তাছাড়া ‘সিটি কর্পোরেশন পরিচালন ব্যবস্থা (গভর্ন্যান্স) উন্নয়ন কৌশলপত্র ২০২০-২০৩০’ শিরোনামে দেশের সিটি কর্পোরেশনগুলোর জন্য দশ বছর মেয়াদী একটি কৌশলপত্র আছে সরকারের। সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে নাগরিকদের উন্নত সেবা দেয়া- এ কৌশলপত্র প্রণয়নের অন্যতম উদ্দেশ্য। ওই কৌশলপত্রে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) রূপকল্প (ভিশন) ধরা হয়, ‘পরিচ্ছন্ন ও সবুজ চট্টগ্রাম নগরী’। একইসাথে মিশনের (অভিলক্ষ্য) প্রধান উপাদান হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ‘পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো উন্নয়ন ও আর্থ-সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে নাগরিকদের সেবা নিশ্চিতকরণ ও নগরকে একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সবুজ নগরীতে পরিণত করে নগরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন’। স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রার সাথে সংগতি রেখে চট্টগ্রামকে বিশ্ব বাণিজ্যের হাব ও নান্দনিক নগরী হিসেবে দেখতে চান শেখ হাসিনা। এসব বিষয়কে মাথায় রেখেই কাজ করছি আমরা। ভাঙ্গাচোড়া, এবড়ো থেবড়ো, ধূলাবালিময় ছিল নগরের অধিকাংশ রাস্তাঘাট ও অলি গলি। আজকে প্রতিটি ওয়ার্ডের গলি থেকে রাজপথের প্রায় সবগুলোতেই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। মসৃণ করে তোলা হচ্ছে সবকিছুই। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমেও লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া, পেয়েছে গতি। আধুনিক ডিজাইনের সড়কবাতিতে মোহনীয় রূপ পেয়েছে নগরের বিশেষ বিশেষ এলাকা। তাছাড়া, সিটির প্রায় সব এলাকাকেই আলো ঝলমলে সন্ধ্যা উপহার দিতে সক্ষম হয়েছি আমরা। সিটির প্রাণকেন্দ্র থেকে প্রান্তিক এলাকা সব জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন ও নিরাপদ করতে ব্রিজ, ফুটওভার ব্রিজ ও রাস্তা নির্মাণ করছি।

নগরের খাল, নালা, নর্দমা ও ফুটপাথ থেকে অবৈধ স্থাপনা অপসারনে কর্পোরেশনকে নানামূখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। সব প্রকার চাপ ও প্রতিবন্ধকতাকে গ্রাহ্য না করেই আমরা এ কাজ সম্পাদনে আমরা ঠিকই সফলকাম হতে পারছি। এ কাজের ধারা অব্যাহত রয়েছে অচিরেই প্রায় সবগুলো খাল, নালা ও ফুটপাথকে অবৈধ দখলদারমুক্ত করা হবে। এ ব্যাপারে ছাত্র, যুব ও সাধারন মানুষের সমর্থন পাচ্ছি। এ সমর্থনকে আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে সাধুবাদ জানাই। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও যান চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রাখতে পাঁচ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে জিইসি মোড়ে চর্তুমুখী, এক কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে জালালাবাদ এলাকায় ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ সড়ক সংযোগস্থলে এবং এক কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কাপ্তাই রাস্তার মোড়েও ওভারব্রিজ নির্মাণ করব আমরা। মোহরা এলাকায় ছয় কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ওসমানিয়া পিসি গার্ডার সেতু তৈরি করতে যাচ্ছি আমরা।

শহরকে স্মার্ট সিটিতে রূপদান করতে সিটিতে পার্ক ও খেলার মাঠ উন্নয়ন, নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ম্যাকানিক্যাল পার্কিং স্থাপন, চসিকের ওয়ার্ড অফিসগুলো সংস্কার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বিভিন্ন আয়বর্ধক প্রকল্প, নগরে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, সিটিতে স্বাধীনতা স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোর সংরক্ষণ প্রকল্প এবং আগ্রাবাদ ডেবা ও পাহাড়তলী জোড় দীঘির সংস্কার প্রকল্প নেয়ার পরিকল্পনা আছে আমাদের।
এছাড়া, বিওটির (বিল্ড অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার) আওতায় বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, যানজট নিরসনে মেট্রোরেল নির্মাণ, ঠান্ডাছড়ি পার্ক নির্মাণ, আউটার রিং রোডের পাশে সী সাইটে ওশান পার্ক ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। এছাড়া, আধুনিক নগর ভবন নির্মাণ, স্মার্ট সিটি প্রকল্প, চসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, মাস্টার প্ল্যানের সুপারিশমতে প্রস্তাবিত নতুন সড়ক নির্মাণ, মুরাদপুর, ঝাউতলা, অক্সিজেন ও আকবর শাহ রেলক্রসিংয়ের ওপর ওভারপাস নির্মাণ, ঢাকামুখী, কক্সবাজারমুখী ও হাটহাজারীমুখী বাস টার্মিনাল নির্মাণ, ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ফুট ওভার ব্রিজ এবং ওভারপাস/আন্ডারপাস নির্মাণ, চসিকের নিজস্ব জায়গায় স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ, কাঁচা বাজারের আধুনিকায়ন, বাকলিয়া স্টেডিয়ামে স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ, ওয়ার্ডভিত্তিক খেলার মাঠ, শিশুপার্ক, কমিউনিটি সেন্টার, মিলনায়তন, ব্যায়ামাগার ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ, নগরের বিভিন্ন স্থানে আধুনিক কনভেনশন হল নির্মাণ, জোনভিত্তিক মুক্তমঞ্চ ও থিয়েটার ইনস্টিটিউট নির্মাণ, বিবিরহাট গরুর বাজার শহর হতে দূরে ফতেয়াবাদ স্থানান্তর করা, নগরের প্রধান সড়কসমূহের ফুটপাত, মিডিয়ান, রাউন্ড আধুনিকীকরণ এবং লেন পার্কিং ও জেব্রা ক্রসিংসহ উন্নয়ন, নগরের কাঁচা সড়কগুলো পাকাকরণ ও হকার পুনর্বাসনের চিন্তাও আমাদের রয়েছে। এছাড়া, ভূগর্ভস্থ বর্জ্যাগার নির্মাণ, ২১টি খালের উন্নয়নে প্রকল্প নিতে যাচ্ছি আমরা। কালুরঘাটে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষকে দেয়া চসিকের জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনিকিউবেশন সেন্টার।’

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে দুই হাজার ১৩৫ মেট্রিক টন বর্জ্য হয়। সত্যি কথা বলতে কি, বর্জ্য অপসারণে আমাদের কর্মীদের প্রায়শঃই হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখানে শৃঙ্খলা আনতে নগরবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতা বিশেষ প্রয়োজন। নগরবাসীর কাছে আমাদের পরামর্শ হল, যত্রতত্র ময়লা ও পলিথিন ফেলবেন না। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ আমাদের রয়েছে। বর্জ্য থেকে বিদ্যু উৎপাদনের জন্য ১৩টি প্রস্তাব বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কারিগরি কমিটি চারটি কোম্পানির প্রস্তাবনা নির্বাচন করেছে। প্রকল্পটি বাম্দবায়নের জন্য কাজ চলছে। মেডিকেল বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একটি ইনসিনারেশন প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে।

বন্দর নগরীর তারের জঞ্জাল অপসারণে তিনটি ওয়ার্ডে গেল ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে পাইলট প্রকল্প শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। প্রাথমিকভাবে লালখান বাজার, বাগমনিরাম ও জামালখান ওয়ার্ডে পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এ প্রকল্প সফল হলে পরবর্তী অন্যান্য ওয়ার্ডে এ কার্যক্রম প্রসারিত করব আমরা। উদ্ধার হওয়া খালগুলোকে রক্ষার্থে প্রকল্প শেষ হলে সেখানে নৌকা চালুর পরিকল্পনা আছে আমাদের। কারণ, প্রকল্প শেষ হলে খালগুলো রক্ষা করা হবে বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য প্রকল্প শেষ হলে খালগুলোতে বিনোদনের ক্ষেত্র তৈরির জন্য বারইপাড়া খালসহ উদ্ধার হওয়া সবগুলো খালে নৌকা ও স্পিডবোট চালু করব। খালে যখন মানুষ ময়লা দেখবে না বরং স্বচ্ছ জলপ্রবাহে বিনোদনের উৎস খুঁজে পাবে, তখন মানুষ আর খালে ময়লা ফেলবে না।

চট্টগ্রাম নগরীতে তিন সংস্থার মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনে মোট ১১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার মোট চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পগুলোর সুফল পেতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাড়ানো হবে। আমরা প্রকল্প এলাকাগুলোতে ময়লার ভাগাড়ও নির্মাণ করব। যাতে খালপাড়ের মানুষ বর্জ্য ফেলে খাল ময়লা দিয়ে ভরিয়ে না ফেলে। প্রকল্প এলাকায় উদ্ধার হওয়া খালসংলগ্ন ভূমি রক্ষায় সীমানা নির্ধারণী খুঁটি বসাব। কারণ, এ খালগুলোকে রক্ষার সাথে কর্ণফুলী ও চট্টগ্রামের অস্তিত্বের প্রশ্ন জড়িত।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জাপানের একটি ও দক্ষিণ কোরিয়ার একটি, মোট দুইটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব জমা দিয়েছে। তবে, কোন কোম্পানিকে প্রকল্পটি দেয়া হবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনার পর বিষয়টি নির্ধারণ করা হবে। লেখার কলেবর বৃদ্ধি না করে প্রিয় নগরবাসীর কাছে আবেদন রেখে উল্লেখ করতে চাই যে, বিশ্ব বাণিজ্যের হাব হিসেবে উপযুক্ত করে চট্টগ্রামকে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে আমরা এগুতে চাচ্ছি, তা বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা চাই। নগরবাসীর সচেতনতা, সহযোগিতা ও সমর্থন থাকলে চট্টগ্রাম হবে সবুজ, পরিচ্ছন্ন, স্মার্ট ও বিশ্বজনীন একটি নান্দনিক নগরী।

সকলকে জানাই ধন্যবাদ ও অন্তহীন শুভ কামনা। সকলে সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকুন, সুন্দরের সাথে থাকুন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয়তু শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

লেখক: বীর মুক্তিযোদ্ধা, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ
মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।